সাব্বির না লিটন, সিদ্ধান্তহীন বাংলাদেশ!


ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে সাব্বির রহমানের সর্বশেষ ফিফটি গত বছরের সেপ্টেম্বরে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে। এরপর ১৭ ইনিংসে সাব্বির যেন হতাশার প্রতীক! বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টকেও গ্রাস করেছে সেই হতাশা। নিদাহাস ট্রফিতে বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সাব্বিরকে খেলানো হবে কি না, এ নিয়ে চলছে চরম সিদ্ধান্তহীনতা।

টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট বলেই সাব্বিরের ব্যর্থতাটা বেশি করে চোখে পড়ছে টিম ম্যানেজমেন্টের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের এ হার্ড হিটার সর্বশেষ পঞ্চাশের দেখা পেয়েছিলেন দুই বছরের বেশি সময় আগে। ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তারপর ১৭ ইনিংসে ব্যাটিং করা সাব্বিরের ব্যাটে কোনো ফিফটি নেই!

ফিফটি না পেলেও এই সময় টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৪৪ ও ৪৮ রানের দুটি ইনিংস আছে সাব্বিরের। এর একটি ওমান আর অন্যটি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। প্রায় এক বছরের বেশি সময় আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ৪৮ রানের পর সাব্বিরের ব্যাটে রান নেই। শ্রীলঙ্কা কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা সফর আর ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ—ভালো করতে পারেননি কোনোটিতেই। সংবাদ সম্মেলনে তাই আজ উঠেছিল কাল সাব্বিরের দলে থাকার প্রসঙ্গ।

বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ নিজেও যে এ ব্যাপারে বেশ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন, সেটা টের পাওয়া গেল তাঁর কথায়, ‘টিমের ব্যাপারে আমরা অনেক দিন ধরেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। সাব্বির এর আগে ভালো করছিল। কিন্তু সম্প্রতি সে ভালো করতে পারছে না।’ তবে এই বাজে সময়ে সাব্বির যে একা নন, সেটাও জানিয়ে দিলেন অধিনায়ক, ‘যেকোনো ব্যাটসম্যানেরই এমন সময় যায়। আমরা ওকে সমর্থন দিচ্ছি।’

ধরে নেওয়া যাক, কাল সাব্বিরকে যদি দলে রাখা হলো না। তাহলে সাব্বিরের স্থলে একজন ব্যাটসম্যান তো লাগবে? মাহমুদউল্লাহর কথায় উঠে এল লিটন দাসের নাম, ‘দেখা যাক কাল আমরা কাকে খেলাতে পারি। লিটন এর আগে ভালো করছে। আমরা আশা করি, সেরা একাদশ নিয়েই নামব।’ সর্বশেষ ঘরের মাঠে টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছিলেন লিটন। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে তাঁর পারফরম্যান্স হতাশাজনক। ৪ ম্যাচে ব্যাটিং গড় মাত্র ১৪.৫০। তবে লিটন সবাইকে আশাবাদী করেছেন প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ করে। গতকাল শ্রীলঙ্কার বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের বিপক্ষে লিটন ১৮ বলে করেন ৪০। কাল সাব্বিরের বদলে লিটনকে খেলিয়ে দিলে কিন্তু অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।

প্রতিপক্ষ ভারতের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা মাহমুদউল্লাহর। আর সেটি হওয়াটাই স্বাভাবিক। নিদাহাস ট্রফির প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হেরে গেলেও ভারতকে এগিয়ে রাখছেন তিনি। বিরাট কোহলি-মহেন্দ্র সিং ধোনি কিংবা ভুবনেশ্বর কুমাররা শ্রীলঙ্কায় না এলেও ভারতে যে ‘অভিজ্ঞ’ ক্রিকেটারের অভাব নেই, আজ সেটিও জানিয়ে রাখলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘ওদের অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এই সফরে আসেনি। তবুও এদের যে দলটা এসেছে, আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে ওরা অনেক বেশি অভিজ্ঞ। ওরা অনেক বেশি আইপিএল খেলেছে। আমার তো মনে হয় আমরা যে ভালো খেলতে পারি, এটা নিয়েই ভাবা উচিত। এর বাইরে কিছু ভাবা ঠিক হবে না।’

অন্য কিছু না ভাবতে চাইলেও ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের আগে একটি ভাবনা কিন্তু বারবারই চলে আসছে। দুই বছর আগে সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষে যে টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা খেলেছে, সেটিতে বাংলাদেশের হারটা ছিল খুবই পীড়াদায়ক, মন ভেঙে দেওয়ার। বেঙ্গালুরুতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে বাংলাদেশ যে হেরে গিয়েছিল ১ রানে। সে ম্যাচের শেষ ওভারে ৩ বলে ২ রান দরকার থাকলেও বাংলাদেশ সেটা করতে পারেনি। ঘটনাবহুল সেই ওভারটিতে পরপর দুই বলে ফিরেছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ।

No comments

Powered by Blogger.