ফুলনগরীর নতুন অতিথি জারবেরা



সাঈদুর রহমান,কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) থেকেঃ ঝিনাইদহের ফুলনগরী খ্যাত কালীগঞ্জের নতুন অতিথি এখন জারবেরা ফুল। কালীগঞ্জ উপজেলা ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ছোটঘিঘাটির মাঠে এই বিদেশি জাতের ফুলের চাষ করা হয়েছে। ত্রিলোচনপুর গ্রামের ফুল চাষী ও ফুল ব্যবসায়ী টিপু সুলতান এবং নুর মোহাম্মদ যৌথভাবে প্রায় তিন বিঘা জমিতে এই ফুলের চাষ করেছেন। প্রায় ২০ বছর ধরে এই ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে কৃষকরা শত শত একর জমিতে গাঁধা, রজনীগন্ধা, গোলাপ ও গ্যালোডিয়াসসহ বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করে থাকে। চলতি বছরও এই উপজেলার ৩২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের চাষ করা হয়েছে। যে কারনে এ এলাকাটি মানুষের কাছে ফুল নগরী বলে পরিচিত। বিদেশি জাতের এই ফুল লাল, সাদা, হলুদ ও গোলাপিসহ ৮টি বাহারি রঙের হয়ে থাকে। তবে এই ফুলের কোন গন্ধ নেই। বিদেশি জাতের এই ফুলটি ক্ষেত থেকে তোলার পরও ১০ থেকে ১৫ দিন তাজা থাকে। যে কারনে বাজারে এই ফুলে চাহিদা বেশ।

২০১৭ সালের জুন মাসে প্রায় তিন বিঘা জমিতে প্রথম এই ফুলের বীজ রোপন করেন ফুলচাষী টিপু সুলতান ও নুর মোহাম্মদ। বীজ আনা হয় পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে। আর ফুল ক্ষেতের উপর ছাউনি দিতে একই দেশ থেকে আমদানি করা হয় বিশেষ ধরনের পলিথিন। যা তৈরি হয় ইউরোপের দেশ গুলোতে। রোপনের তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। একটি গাছ একাধারে দুই থেকে তিন বছর ফুল দেয়। এ সময়ে একটি গাছে ২০ থেকে ২৫ ফুল পাওয়া যায়।
কৃষিবিদ ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জারবেরা ফুল চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। বছরের যে কোন সময় চাষ করা যায়। শীত মৌসুমের উৎপাদন বেশি হয়। এছাড়া দেশের বাজারে এই ফুলে দাম ও চাহিদা বেশি। তবে এই ফুল লাভজনক হলেও খরচ বেশি হওয়ায় চাষ করতে পারছে না সাধারন কৃষকরা।

ফুলচাষী টিপু সুলতান ০১৯৭২ ৭৮৪০৯০ জানান, গেল বছরের রোজার মাসে পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে বীজ সংগ্রহ করে ৯৬ শতক জমিতে রোপন করি। এরপর তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। বীজ রোপন, ক্ষেতের চারপাশে বাশেঁর বেড়া স্থাপন, উপরের ছাউনি, সার ওষুধ ও শ্রমিক খরচসহ এ পর্যন্ত ৩৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এই ফুল পরিচর্যা করার জন্য চারজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করে।
তিনি আরো জানান, গত ছয় মাসে ১৫ লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২শ ফুল সংগ্রহ করা যাচ্ছে। একটি ফুল ১০ থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চাহিদা অনুযায়ি প্রতিদিন এই ফুল ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে ঢাকা, সিলেট, চট্রগ্রাম দেশের বিভিন্ন শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম (০১৭১৭ ৫৬২১৫৪) জানান, জার্মান পরিবেশবিদ ডাক্তার ট্রগোট জারবের এর নামানুসারে ফুলটির নামকরণ করা হয়।


No comments

Powered by Blogger.