কালীগঞ্জে কামলার হাটের বেচা-কেনা


এম, শাহজাহান আলী সাজু, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) থেকে ॥
কলেজ ছাত্র রাব্বুল, ইমরান, রিপন, শাকিলসহ ৬বন্ধু ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কামলার হাটে বিক্রি হয়েছে ধান কাটার জন (কামলা) হিসেবে। শুক্রবার কালীগঞ্জের কামলার হাটে এভাবে প্রায় সহ¯্রাধিক মানুষের বেচা-কেনা হয়েছে মৌসুম ভিত্তিক ধান কাটার কামলা হিসেবে। ইরি-বোরো ধান কাটার মৌসুমে এক যোগে ধান পেকে যাওয়ায় (কাটার উপযোগি) ক্ষেত মালিক ও শ্রমিকদের (কামলা) মধ্যে বেচা কেনার ধুম পড়ে যায়।
স্বরেজমিনে শুক্রবার কালীগঞ্জের কলেজ সড়কের মুরগি হাট এলাকায় কামলার হাটে গিয়ে দেখা যায় ,শত শত মানুষের বেচা-কেনা। অসংখ্য ধান ক্ষেত মালিক তাদের কষ্টের উৎপাদিত কাংক্ষিত ধান দ্রুত ঘরে তুলতে জন (কামলা) চুক্তি করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। কেউ জন প্রতি দিন, আবার কেউ বিঘা প্রতি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছেন। স্থানীয় ভাষায় যা জন বেচা-কেনা হিসেবে পরিচিত। শৈলকুপা উপজেলার কানাপুকুরিয়া গ্রামের রাব্বুল, ইমরান, রিপন, শাকিল, জামির ও সবুজ ৬বন্ধু তিন বেলা খাওয়াসহ এক বিঘা (৪৬শতাংশ) ৩হাজার ৬শত টাকা চুক্তিতে বিক্রি হয়েছেন। এদের মধ্যে ৫জন স্থানীয় কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। রাব্বুল জানায়, তারা সবাই কৃষি পরিবারের ছেলে। লেখা পড়ার পাশাপাশি পরিবারে মাঝে মধ্যে কাজ করে থাকেন। বর্তমান ধান কাটা মৌসুমে নিজেদের খরচ জোগাড়ে অল্প সময়ে অধিক আয়ের জন্য বন্ধুরা মিলে শ্রম বিক্রি করতে এসেছেন।


কুষ্টিয়াও কুমারখালী উপজেলার দক্ষিন মনোহর পুর গ্রামের শরিফুল ইসলামসহ ৫জন একই ভাবে বিঘাপ্রতি ৫হাজার ৭শত টাকা চুক্তিতে বিক্রি হয়েছেন। শরিফুল জানান, তারা প্রতিদিন এক হাজার টাকা জনপ্রতি আয়ের লক্ষে কাজ করবেন। রাব্বুল ও শরিফুলদের মত শত শত শ্রমিক তাদের শ্রম বিক্রি করার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে এসেছে কালীগঞ্জের হাটে। শুক্রবার ভোর থেকে সন্ধা পর্যন্ত শ্রমের এ বেচা-কেনা হতে দেখা যায়। যাদের অধিকাংশই কুষ্টিয়া, ঈশ্বরদী, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, মাগুরা ও ঝিনাইদহ এলাকার মানুষ বলে জানা যায়।
শালিখা উপজেলার ধনঞ্জয়পুর গ্রামের ধান ক্ষেত মালিক ঠান্ডু মিয়া বিঘাপ্রতি ৫হাজার ৭শত টাকা চুক্তিতে ৬জন নিয়েছেন বলে জানান। তার ১২ বিঘা জমির ধান এক যোগে পেকে যাওয়ায় এবং বৈরী আবহাওয়ার কারনে তিনি অধিক মূল্যে কামলা কিনতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি আরো জানান, তারা ৬জন ক্ষেত মালিক আলমসাধু গাড়ি নিয়ে এসেছে কালীগঞ্জে কামলা কিনতে। কালীগঞ্জসহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার ক্ষেত মালিকদের একইভাবে কামলা নিয়ে যেতে দেখা যায়।

No comments

Powered by Blogger.