আজ ২৮শে অক্টোবর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৭তম শাহাদৎ বার্ষিকী
মহেশপুর(ঝিনাইদহ)থেকেঃ আজ ২৮শে অক্টোবর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৭তম শাহাদৎ বার্ষিকী। এই উপলক্ষে তার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন করবেন স্থানীয় এমপি, উপজেলা প্রশাসন ও তার পরিবারের সদস্যরা। তার নামে নির্মিত মহা বিদ্যালয়ে ও নিজ গ্রাম খর্দ্দ খালিশপুরে দোয়া মাহাফিল অনুষ্ঠিত হবে।১৯৪৫ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগুনা জেলার চাপড়া থানার ডুমুরিয়া গ্রামে তার জন্ম হয়। তার পিতার নাম মরহুম আক্কাস আলী এবং মাতার নাম মরহুমা কায়ছুন নেছা। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তাদের পরিবার বৃহত্তর যশোরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দ খালিশপুর গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। ৭ ভাই-বোনের মধ্যে হামিদুর রহমান ছিলেন সবার বড়। সংসারে অভাব অনটনের কারণে বাবা আক্কাস আলীর সাথে তিনি ঘরামির যোগালের কাজে যেতেন। ১৯৭১ সালে ২রা ফেব্রুয়ারী হামিদুর রহমান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সে সময় দেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের ঢেউ শুরু হয়েছে। তাকে প্রশিক্ষণে পাঠানো হয় ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ট্রেনিং সেন্টার চট্রগ্রামে। ২৫শে মার্চ রাতে খান সেনারা বাঙ্গালীদের উপর আক্রমন শুরু করলে চট্রগ্রামেই প্রথম সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রথম খান সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। হামিদুর রহমানও ঐ যুদ্ধে অংশ নেয়। তাদের যুদ্ধকালীন এলাকা ছিল সিলেট জেলার শ্রীমঙ্গল এলাকায়। তিনি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে দক্ষিনপূর্ব কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শত্রু পক্ষের দুইজন সৈন্যকে ঘায়েল করেন। এরপর শত্রু পক্ষের গুলিতে ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর সকালে তিনি শাহাদৎ বরন করেন। এই যুদ্ধে মাইন বিষ্ফরণে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত ও নিহত হয়। যুদ্ধকালীন সময়ে তার ইউনিট কমান্ডার ছিলেন লে. কায়ুম এবং সেক্টর কমান্ডার ছিলেন জেড ফোর্সের অধিনায়ক জিয়াউর রহমান। তখন তার সহযোদ্ধারা তার লাশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ধলই জেলার সদর আমবাসার থেকে ৮৬ কিলোমিটার দূরে হাতিমারা ছড়া গ্রামে জানাযা দেওয়ার পর একটি মুসলিম পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করেন। ৩৬ বছর পর ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর তার দেহবাশেষ ঢাকায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে নিয়ে আসা হয় এবং তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. ইয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ এই জাতীয় বীরের দেহবাশেষ গ্রহন করেন। সেখানে সর্ব স্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর ১১ই ডিসেম্বর মিরপুরস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে আর এক বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট ল্যাফট্যন্টনেন্ট মতিউর রহমানের সমাধিস্থলের পাশে পুরা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পূণঃ সমাহিত করা হয়। সরকারী বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, সকাল ৯টায় পতাকা উত্তোলন, শোক র্যলী, প্রতিকৃতিতে মাল্য দান,মিলাদ মাহাফিল ও আলোচনা সভার আয়াজন করা হয়েছে। ঐ সকল অনুষ্ঠানে স্থানীয় এমপি মোঃ নবী নেওয়াজ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
No comments