এক তরফা নির্বাচনের জন্যই এই তফসিল : মির্জা ফখরুল

চিত্রা নিউজ ডেস্ক: এক তরফা নির্বাচনের জন্যই এই তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে মন্তব্য করে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণ এ নির্বাচন মানবে না।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তফসিল পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনকে তফসিল পেছানোর জন্য অনুরোধ করেছিলো। কিন্তু তারা সে অনুরোধ না রেখে একতরফা নির্বাচন করার জন্যই এই তফসিল দিয়েছে।’ ফখরুল জানান, ‘২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর এই বিষয়ে অামাদের সিদ্ধান্ত জানাবো।’ 
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের তফসিল ঘোষণার পর মির্জা ফখরুল ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাৎক্ষনিকভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া জানান। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পাটি তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, নির্বাচন নিয়ে সব ধোয়াশা কেটে গেছে। আমরা তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। পুন:তফসিলের কোন প্রয়োজন নেই বলেও জানান তিনি। নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ওয়াকিল উদ্দিনের নেতৃত্বে গুলশান থানা আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘তফসিল ঘোষণা করায় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আমরা নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদ জানাই। আমরা আশা করি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৪০টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছে।’ এ ছাড়া ইসি তাদের পরামর্শ যতটা সম্ভব কার্যকর করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এবারে বেশি সংখ্যক আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োগের ব্যাপারটিকে সাধুবাদ জানাই।’ এছাড়া, নির্বাচনকে অর্থবহ করতে, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করার জন্যও আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় পার্টি। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্য়ক, সাইফুল হক বলেন, ‘সংলাপ শেষ হাওয়ার আগেই একতরফাভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্যে দিয়ে, সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনাকে আরও জটিল করে তোলা হলো।’ তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। বিরোধী দলগুলোর উপর হয়রানি চলমান। এরই মধ্যে তফসিল ঘোষণা করা, নির্বাচন কমিশনের দলীয় আনুগত্যেরই প্রমাণ।’ তফসিল ঘোষণার প্রতিক্রিয়া আ স ম আব্দুর রব প্রথমেই জানতে চান, কিসের তফসিল, কোন তফসিল? তিনি বলেন, ‘দেশে ৫ বছর পর পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসে। জনগণ নির্বচনে আংশগ্রহণ করতে চায়। কিন্তু তারা কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে??’ যেখানে জালিয়াতি, ভোট চুরি, ডাবল ব্যালট ছাপানো আর ইভিএম এর মাধ্যমে কারচুপি হবে।’ নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভোটের অধিকার জনগণের নাগরিক অধিকার, তুমি কে নুরুল হুদা না বেহুদা। সরকার কে? সরকারের জন্য জনগণ নাকি জনগণের জন্য সরকার। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং ইভিএম ব্যবহারের ব্যাপারে আপনারা এতো চিন্তিত কেনো। আমরা কোন চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্র করছি না, জ্বালাও পোড়াও করছি না, সরকারই দেশকে জাহান্নামে পরিনত করছে।’ 
তিনি আরও জানান, ‘আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। আমরা কোন চক্রান্তে জড়াতে চাই না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। আমাদের সাত দফা দাবি মেনে নিতে হবে।’ 
দেশকে জাহান্নামের পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিচার হচ্ছে, সেখানে এই সরকারের মন্ত্রিসভায় সাজা পাওয়া ৩ মন্ত্রী কীভাবে স্বপদে বহাল থাকেন?’ 

No comments

Powered by Blogger.