যে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনে থাকবে ঐক্যফ্রন্ট: মির্জা ফখরুল

চিত্রা নিউজ ডেস্ক: জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনে থাকবে বলে জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে কোন অবস্থাতেই নির্বাচনে থাকবে। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করবে।’ শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) রাত নয়টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ফখরুল বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন সম্পর্কে সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা বিভিন্ন মিডিয়ায় কটূক্তি করেছে এটা মোটেও রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়েনা। তার চরিত্র হরণ করা হচ্ছে। ড. কামাল হোসেন বর্তমানে এদেশের একজন জনপ্রিয় নেতা। তিনি দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সত্যিকার অর্থে একটি কল্যাণমূখি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে। হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে যারা কথা বলছেন তাদের উপর নির্যাতন নিপিড়ন চলছে। গুম করে দেয়া হচ্ছে। তার প্রতিবাদ করছেন ড. কামাল হোসেন। তার চরিত্র হরণ ও হেয় প্রতিপন্ন করার প্রতিবাদ করছি আমরা।’ তিনি বলেন, ‘ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন একজন প্রথিতযশা আইনজীবী। তিনি এই সরকারের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তাকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে একটি মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। জামিন দেয়া হচ্ছে না। জামিন তার প্রাপ্য। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।’ ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে এবং মনোনয়নপত্র দাখিলের পরবর্তীতে যে অবস্থা সেটা পর্যালোচনা করেছি। আমরা দেখেছি এই স্বৈরাচারী সরকার অত্যন্ত উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জনগণের অধিকার হরণ করছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের যে অপচেষ্টা চলছে, সেটাকে বাস্তবায়ন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের উপরে চড়াও হয়েছে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দুঃখ জনকভাবে সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছে। একইভাবে গণতান্ত্রিক কর্মীরা যেন মাঠে না থাকতে পারে, নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে না পারে তার জন্য পুরনো কায়দায় মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করছে। এমনকি মনোনয়নপত্র দাখিলের পরও গ্রেফতার চলছে। তিনজন প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুতরাং নির্বাচনের যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তার নুন্যতম অবকাশ নেই। আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন চাই। অবিলম্বে গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে। যেটা প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন তফসিল ঘোষণার পরে আর কোন গ্রেফতার করা হবে না। দুঃখজনকভাবে সেই গ্রেফতার চলছে। অবিলম্বে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘ঘরে ঘরে যে তল্লাশি চলছে তা বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অন্যথায় এই নির্বাচনে যে পরিবেশ তৈরি হচ্ছে তার সকল দায়-দায়িত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বহন করতে হবে।’ তিনি জানান, শনিবার বিকেল তিনটায় প্রেস ক্লাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলবেন ড. কামাল হোসেন। আসন বন্টন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘আসন বন্টনের হিসাব ২ তারিখে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পরে পাবেন। ঐক্যফ্রন্টের ইশতিহারের কাজ চলছে। খু্ব শিগগিরই এ বিষয়ে জানানো হবে।’ ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, আবদুল মালেক রতন, শহীদুল্লাহ কায়সার, শহীদুল ইসলাম স্বপন, হাবিবুর রহমান তালুকদার, ডা. জাহেদ উর রহমান।

No comments

Powered by Blogger.