আবার সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, শিশুসহ একই পরিবারের চারজন দগ্ধ

চিত্রা নিউজ ডেস্ক:একের পর এক সিলিন্ডার গ্যাস বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটেই চলছে।চলতি মাসের গোড়ার দিকে সাভারের জামগড়ায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন নিহত হওয়ার পর এবার আশুলিয়ায় শিশুসহ চারজন দগ্ধ হয়েছেন। সিলিন্ডার থেকে নির্গত গ্যাস ও বাথরুমে জমে থাকা মিথেন গ্যাস থেকে অগ্নিকাণ্ডে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এতে একই পরিবারের শিশুসহ তিন জন ও অপর এক প্রতিবেশী যুবক অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। শনিবার ভোর সাড়ে ৫টায় আশুলিয়ার পশ্চিম বাইপাইল এলাকার মোস্তফা দেওয়ানের মালিকাধীন একতলা বাড়ির একটি কক্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে। অগ্নিদগ্ধ আকরাম হোসেন ডিইপিজেডের ইয়ং ওয়ান গার্মেন্টের সিনিয়র মেকানিক্স ও তার স্ত্রী লাবলী আক্তার স্থানীয় ফাউনটেইন নামে একটি গার্মেন্টের অপারেটর পদে কাজ করতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালীর থানা এলাকায়। অগ্নিদগ্ধ সোহাগ নামে প্রতিবেশী অপরজন ডিইপিজেডের ইয়ং ওয়ান গার্মেন্টের শ্রমিক। অগ্নিদগ্ধ প্রতিবেশী যুবক গার্মেন্ট শ্রমিক সোহাগ জানান, ভোরে প্রতিবেশী আকরামের কক্ষে তার স্ত্রী রান্নার জন্য আগুন জ্বালাতে গেলে বিকট আওয়াজে সবার ঘুম ভাঙ্গে। এসময় পুরো কক্ষে আগুন ছড়িয়ে পড়লে দম্পতি আকরাম হোসেন, তার স্ত্রী লাবলী আক্তার ও আট বছরের ছেলে আশিকুর রহমান অগ্নিদগ্ধ হয়। পরে তাদের নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়। এসময় আগুন নেভাতে কক্ষে প্রবেশ করলে তার হাত ও পায়ের কিছু অংশ সামান্য পুড়ে যায়। পরে স্থানীয় ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন তিনি। তবে আকরামের শরীরের অধিকাংশ পুড়ে গেছে।
তিনি আরো জানান, অগ্নিকা-ের সময় ওই কক্ষের বাথরুম ও রান্নাঘর থেকে প্রচণ্ড বেগে আগুনের শিখা বের হতে থাকে। আর বিস্ফোরণের কারণে কক্ষের দরজা, জানালা ও দেয়ালে ফাটলও দেখতে পান তারা। এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একই ভবনের পাশ্ববর্তী মাদারগঞ্জ ইলেকট্রনিক্স এন্ড ফার্ণিচার নামে একটি শোরুমে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শোরুমটির মালিক সিরাজুল ইসলাম জানান, ছয় জন যৌথভাবে তাদের অনেক কষ্টে জমানো অর্থ দিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেছিলেন। কিন্তু আগুনে শোরুমে থাকা প্রায় ৫০ লাখ টাকার ইলেট্রনিক্স ও ফার্ণিচার মালামাল পুড়ে গেছে। ডিইপজেড ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা হুমায়ন কবির জানান, বাথরুমে জমে থাকা মিথেন গ্যাস ও ত্রুটিপূর্ণ সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে নির্গত গ্যাস জানালা দরজা বন্ধ থাকার কারণে কক্ষে জমে ছিল। আর সকালে রান্নার সময় আগুন জ্বালাতে গেলে তা বিস্ফোরিত হয়ে একই পরিবারের তিন জনসহ আরো একজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। অগ্নিদগ্ধ তিন জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ২ নভেম্বর আশুলিয়ায় জামগড়ার মানিকগঞ্জপাড়া এলাকার কবরস্থান রোডে আব্দুল হামিদের মালিকানাধীন দুইতলা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচ জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চার জন মারা যান।

No comments

Powered by Blogger.