বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই

চিত্রা নিউজ ডেস্ক: একাত্তরের রণাঙ্গনের বীরকন্যা বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) মধ্যরাত দেড়টায় কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কাচরিপাড়ায় নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে বক্ষব্যাধিসহ নানা রোগে ভুগছিলেন তারামন বিবি। গত ৮ নভেম্বর রাজীবপুর থেকে নিয়ে ময়মনসিংহ সিএমএইচে (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) ভর্তি করা হয় তাকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয় তারামন বিবিকে। সেখানে চিকিৎসা শেষে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে সপ্তাহখানেক আগে তাকে রাজীবপুরের বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। স্বজনরা জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তারামন বিবির শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি হয়। তখন তাকে রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন বাড়িতেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন। কিন্তু রাত দেড়টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন তারামন বিবি।

প্রেসিডেন্টের শোক
এদিকে মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক তারামন বিবির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। শোকবার্তায় প্রেসিডেন্ট বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবির অংশগ্রহণ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে একটি উদাহরণ ছিল। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।”
শনিবার প্রথম প্রহরে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে নিজের বাড়িতে মৃত্যু হয় মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবির। পৃথক বার্তায় শোক প্রকাশ করেছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
শোকবার্তায় স্পিকার বলেন, “বীরপ্রতীক তারামন বিবি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ দেশপ্রেমী । তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের এক অকুতোভয় বীরসেনানীকে হারাল।” তারামন বিবি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট আর ডায়েবেটিসে ভুগছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে তারামনকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়। কিন্তু ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। ১৯৯৫ সালে ময়মনসিংহের একজন গবেষক প্রথম তাকে খুঁজে বের করেন। নারী সংগঠনগুলো তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে। ওই বছর ১৯ ডিসেম্বর সরকারের পক্ষ থেকে তারামন বিবির হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.