মনোনয়ন ফিরে পেতে ইসিতে ২২ প্রার্থী


চিত্রা নিউজ ২৪ ডেক্সঃ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী ৭৮৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মনোনয়নপত্র ফিরে পেতে ইসির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল শুরু করেছেন অবৈধ ঘোষিত প্রার্থীরা। ৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ২২ জন আপিল করেছেন।
গতকাল ২ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন। সারা দেশে দাখিল করা ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আপিলকারীদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দেওয়া গোলাম মাওলা রনি (পটুয়াখালী-৩ থেকে), চাপাইনবাবগঞ্জ-১ থেকে নবাব মোহাম্মদ শামছুল হুদা, বগুড়া-৭ থেকে খোরশেদ মিলটন, খাগড়াছড়ি থেকে আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, ঝিনাইদাহ-১ থেকে আব্দুল ওয়াহাব, ঢাকা-২০ থেকে তমিজউদ্দিন, সাতক্ষিরা-২ থেকে মোহাম্মদ আফসার আলী, কিশোরগঞ্জ-২ থেকে মো. আখতারুজ্জামান, চাপাইনবাবগঞ্জ-২ মো. তৈয়ব আলী, মাদারীপুর-৩ থেকে মো. আব্দুল খালেক, দিনাজপুর-২ থেকে মোকারম হোসেন, ঝিনাইদাহ-২ অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট আব্দুল মজিদ, ঢাকা-১ খন্দকার আবু আশফাক, দিনাজপুর-৩ থেকে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, জামালপুর-৪ থেকে ফরিদুল কবির তালুকদার, পটুয়াখালী-৩ থেকে মো. শাহাজাহান, পটুয়াখালী-১ থেকে মো. সুমন সন্যামাত, দিনাজপুর-১ থেকে পারভেজ হোসেন, মাদারীপুর-১ থেকে জহিরুল ইসলাম মিন্ট, সিলেট-৩ থেকে কাইয়ুম চৌধুরী, ঠাকুগাঁও-৩ থেকে এসএম খলিলুর রহমান ও জয়পুরট-১ থেকে মো. ফজলুর রহমান।
এদের মধ্যে এক শতাংশ ভোটার না থাকার জন্য চারজন, ত্রুটিপূর্ণ মনোনয়নের জন্য তিনজন, লাভজনক পদে থাকার জন্য সাতজন, হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকার জন্য একজন, আয়কর রিটার্ন দাখিল না হওয়ার জন্য একজন, ঋণখেলাপী দুইজন ও দণ্ডপ্রাপ্ত দুইজন ও অন্যান্য কারণে দুইজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
আপিল শেষে গোলাম মাওলা রনি বলেন, কমিশন যেহেতু সরকারের আজ্ঞাবহ নয়, তাদের মেরুদণ্ড আছে, তাই আমি আশাবাদী, শুনানি শেষে আমার মনোনয়নপত্র ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
হলফনামায় নিজের স্বাক্ষর না থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয় গোলাম মাওলা রনির। এ বিষয়ে তিনি বলেন, হলফনামার অনুলিপিতে স্বাক্ষর না থাকা আমার ভুল ছিল। তবে এটা গুরুতর কোনো ভুল নয়। আমি রিটার্নিং কর্মকরতাকে বলেছিলাম, সঠিক করে দেব। তবে তিনি তাতে রাজি হননি। আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। আগের নির্বাচনগুলোতে এ ধরনের ভুল-ভ্রুান্তি সংশোধন সুযোগ ছিল, কিন্তু এবার পেলাম না।
মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা ইমরান এইচ সরকারও এসেছিলেন সকালে ইসিতে। তিনি আপিল না করলেও খোঁজখবর নিয়ে গেছেন।
এ সময় ইমরান বলেন, যে অজুহাতে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে, তাহলে আমার মনে হয় না কারও মনোনয়ন টিকবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যারা মনোনয়ন দাখিল করেছিল, তাদের সকলের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে বিভিন্ন অজুহাতে।
নিজের মনোনয়ন পত্র বাতিলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেখা গেল ১ থেকে ২৯০০ নম্বরের ভোটার তালিকা, আমি ২৮৯১ পর্যন্ত ঠিক দিলাম.... পরে দেখা গেল ক্রমে ১৫৬ হয়তো দুবার এসেছে, দেখা গেল ১৫৮ না হয়ে ১৫৯ হয়েছে। এটা মাইনর ত্রুটি। সিইসি বলেছিলেন, তিনি এই মাইনর ত্রুটি গণনা করবেন না। অথচ ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, দাখিলের সময় বলেছিলাম, আমি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি দাখিল করি। যদি দুই একটা কম বেশি হয়। সেটা কিন্তু তার নেয়নি। তাৎক্ষণিক সংশোধনের সুযোগ ছিল, সেটাও তারা আমাকে দেয়নি। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
এর আগে ৩ ডিসেম্বর সকালে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, যেসব মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষিত হয়েছে, সেসব প্রার্থীরা তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত কমিশনে আপিলের সুযোগ পাবেন। ৬,৭,৮ ডিসেম্বর আপিলের বিষয়ে নিষ্পত্তি করবে কমিশন।

No comments

Powered by Blogger.