কালীগঞ্জে শিক্ষকের লাঠির আঘাতে ছাত্রীদের শরীরে ক্ষত অভিভাবকদের বিচার দাবি

রবিউল ইসলাম
বাড়ি থেকে তথ্য ফরম পুরণ করে না আনায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক কমপক্ষে ১৫ জন ছাত্রীকে বেধড়ক পিটিয়েছে। যা দেখে ফুসে উঠেছেন অভিভাবকরা। বুধবার তারা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের সলিমুননেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে। আর মারপিট করা শিক্ষক হচ্ছেন মোঃ হাফিজুর রহমান। অভিভাবকরা বলছেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। মেয়েদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া, মেয়েদের শরীরের ওড়না দিয়ে মুখ মোছাসহ নানা অপকর্ম করে চলেছেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ, গত ১৮ মার্চ সলিমুননেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রীদের মাঝে পারিবারিক তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি ফরম বিতরন করা হয়। বলা হয় দ্রুত ফরমগুলো বাড়ি থেকে পুরন করে নিয়ে আসতে। অনেক ছাত্রী পরদিন পূরন করা ফরম আনলেও নানা কারনে অনেকে আনতে পারেনি। ঘটনার দিন ১৯ মার্চ তাদের ক্লাসে আসেন সহকারি শিক্ষক হাফিজুর রহমান। তিনি ছাত্রীদের কাছে পুরন করা ফরম চান, কিন্তু সবাই দিতে পারেনি। ১৫ থেকে ১৬ জন ছাত্রী ফরম দিতে না পারায় তাদের লাইনে দাড় করিয়ে মারতে শুরু করেন ওই শিক্ষক। বেত দিয়ে হাতে সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেধড়ক পেটানো হয় তাদের। একদিন পরই ফরমগুলো জমা দেবেন বলে ছাত্রীরা না মারার অনুরোধ করলেও শিক্ষক হাফিজুর রহমান তা শোনেন নি। এমনকি পরদিনই ফরম জমা দিতে হবে এটা তারা বুঝতে পারেনি বললেও মারপিট অব্যাহত থাকে।
অভিভাবক আ. য. ম আব্দুস সামাদ জানান, মেয়েদের শরীরে এতটা জোরে আঘাত করা হয়েছে, আঘাতের স্থানে ক্ষত ও দাগ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, অভিভাবক হিসেবে মেয়ের অবস্থা দেখে স্থীর থাকা যায় না। তাই তারা বিচার চেয়েছেন। অপর অভিভাবক আবুল কালাম আজাদ জানান, পড়ালেখার জন্য নয় ফরম পুরণ নিয়ে এই মারপিট কোনো ভাবেই মানা যায় না। তারা অবিলম্বে এই শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন। অভিভাবকদ্বয় আরো জানান, তারা ১৪ জন ছাত্রীর বাসায় গিয়ে একই অবস্থা দেখতে পেয়েছেন। সকলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অভিভাবকরা আরো অভিযোগ করেন, দির্ঘদিন যাবত শিক্ষক হাফিজুর রহমান মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরন ও কুরুচিপূর্ণ কথা বলে থাকেন।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিরি সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ২৭মার্চ কমিটির সভা আহবান করা হয়েছে। সেখানে নির্যাতিত শিক্ষার্থী, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীগণ থাকবেন। প্রমান হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষক হাফিজুর রহমান জানান, এভাবে মারপিটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে উচ্ছংখলতার কারনে শাসন করা হয়েছে। কোনো মেয়ের সঙ্গে তিনি কখনও খারাপ আচরন করেন না বলে দাবি করেন। তার বিরুদ্ধে অন্য যে সকল অভিযোগ করা হচ্ছে এগুলো সবই মিথ্যা বলে জানান। একটি পক্ষ তাকে হেও করতে এই সকল মনগড়া অভিযোগ করছেন বলে তার দাবি।

No comments

Powered by Blogger.