ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করে তালের শাঁস ও ওলকচু: ইবি গবেষক

বিপ্লব খন্দকার,ইবি-
পাকা তালের রস, কচি তালের শাঁস, অংকুরিত তালের আটির ভেতরের সাদা অংশ অথবা ওল কচুতে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি গুণ ও ফাইটোকেমিকেল রয়েছে। কোনটিই ডায়াবেটিসের মাত্রাকে বৃদ্ধি করে না বরং উলে¬খযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনে। স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি এসব উপাদানগুলোর পরিমিত মাত্রায় প্রয়োগ করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ শাহিনুর রহমানের গবেষণায় থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, তাল ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক অঞ্চলেরই গ্রীষ্মকালীন জনপ্রিয় ফল। ফলটির বৈজ্ঞানিক নাম ইড়ৎধংংঁং ভষধনবষষরভবৎ। কচি তালের শাঁস, পাকা তালের রস এবং অংকুরিত তালের আঁটির ভেতরের সাদা শাঁস বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেক দেশে একটি জনপ্রিয় খাবার। তাল একটি সুস্বাদু ও পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল হলেও খাদ্য কুসংস্কারের (ঋড়ড়ফ ঞধনড়ড়ং) কারণে অনেক ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি পাকা তালের রস অথবা এর শাঁস খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। এছাড়াও মাটির নীচের সবজি হিসেবে ওলকচুর প্রতিও মানুষের রয়েছে যথেষ্ট খাদ্য ভীতি। কিন্তু এই ধরনের প্রচলিত ধারণার পক্ষে কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য পর্যন্ত পাওয়া যায়না। উলে¬খিত প্রচলিত ধারণার বাস্তবতা মূল্যায়নের নিমিত্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগে বিগত কয়েক বছর ব্যাপি পরিচালিত গবেষণায় তাল এবং ওলকচু সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা পুরোটাই ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ শাহীনুর রহমান তার পিএইচডি গবেষণায় ডায়াবেটিক ইঁদুরের উপর স্বল্প মাত্রায় তালের রস, কচি ও অঙ্কুরিত তাল বীজের শাঁস এবং ওল কচু প্রয়োগ করে ইঁদুরের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সফল হন। বিশেষ করে কচি তালের শাঁস এবং পরিপক্ব তালের অংকুরিত শাঁস ইঁদুরের ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ও পরিপূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
এই গবেষণা কর্মের উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪৫তম সিন্ডিকেট শেখ শাহীনুর রহমানকে পি এইচ ডি ডিপ্রি প্রদান করেছে। গবেষণা প্রকল্পটির কো-সুপারভাইজার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম এবং সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক ড. শেখ মোঃ আব্দুর রউফ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গবেষকরা জানান, অদূর ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি উদ্ভিতজাত উপাদানের সংমিশ্রণে একটি কার্যকর ডায়াবেটিস নিরাময়ে সক্ষম খাদ্য উপাদান তৈরির নিমিত্তে গবেষণা প্রকল্প চালিয়ে যাবেন। এজন্য একটি যুগোপযোগী এনিমাল হাউস ইতোমধ্যে বিভাগে স্থাপন করা হয়েছে। পরিমিত ফান্ড পেলে গবেষণার মান এবং পরিধি বাড়ানো সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন গবেষকরা।

No comments

Powered by Blogger.