না ফেরার দেশে ইবির বাংলা বিভাগের শিক্ষক ইয়াসিন আলী

বিপ্লব খন্দকার, ইবি-
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বাংলা বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক প্রফেসর ইয়াসিন আলী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ও ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
সূত্র মতে, প্রফেসর ইয়াসিন আলী গত ৭ অক্টোবর ব্রেইনস্ট্রোক ও হার্টস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে পরবর্তীতে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় । 
পরে সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে হঠাৎ রক্তে ইনফেকশন বেড়ে গেলে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বাংলা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল সোয়া নয়টায় ইবি ক্যাম্পাসের আম বাগানে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ভিসি প্রফেসর ড. হারুন উর রশিদ আসকারী, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. সেলিম তোহাসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারি উপস্থিত ছিলেন। জানাযা শেষে গ্রামের বাড়ি চাপাইনওয়াবগঞ্জে বিকেলে তার দ্বিতীয় জানাযা নামাজ শেষে সমাহিত করা হবে।
এদিকে প্রফেসর ইয়াসিন আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. হারুন উর রশিদ আসকারী, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. সেলিম তোহা। এছাড়াও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ, বাংলা বিভাগের সভাপতি, শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, শাপলা ফোরামের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রমুখ পৃথক পৃথক শোকবার্তায় শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁরা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, প্রফেসর ইয়াসিন আলী ১৯৬৫ সালে রাজশাহীর চাঁপাইনওয়াবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার রাণীনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রখর মেধাবী ও জ্ঞানতাপস এই শিক্ষক রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে। সেখানে ¯স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী গ্রহণ করে ১৯৯২ সালে যোগদান করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
তিনি তাঁর দীর্ঘ অধ্যাপনা জীবনে বাংলা বিভাগসহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত দশটি বিভাগে ফোকলোর, দর্শন ও মুসলিম দর্শন বিষয়ে পাঠদান করেছেন। আপাদমস্তক এই একাডেমিশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ তিনি ইবি ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
প্রফেসর ইয়াসিন আলীর বাবার নাম ইলিয়াস হোসেন ও মাতার নাম সালেহা বেগম। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। প্রফেসর ইয়াছিন পুরো জীবনে কোন পত্নী গ্রহণ করেন নি। মৃত্যুর সময় তিনি অসংখ্য গুণাগ্রহী রেখে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.