ঝিনাইদহে খালের জায়গা দখল অব্যহত, পাঁকা ভবন করতে ব্যর্থ হয়ে ময়লা ফেলে ভরাট করার হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার-
ঝিনাইদহের মহেশপুরে জিয়া খালের জায়গা একের পর এক দখল অব্যহত রয়েছে। এই খালের উপর এলাকার একাধিক দখলদার ইতিপূর্বে নানা স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। সেই খালেই সাজ্জাদ হোসেন নামের আরেক দখলদার ভবন নির্মান কাজ শুরু করেছিলেন। ভুমি অফিসের পক্ষ থেকে বাঁধাগ্রস্থ হয়ে এবার তিনি খালের মধ্যে ময়লা ফেলে ভরাট শুরু করেছেন।
এলাকাবাসি বলছেন, এই খাল বন্ধ হয়ে গেলে বর্ষা মৌসুমে তাদের এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের বাড়িঘর ও সেই গ্রামগুলোর মাঠের ফসল পানিতে ডুবে যাবে। কিন্তু দখলদাররা সেই বিষয়টি না ভেবে দখল অব্যহত রেখেছেন। সরকারি জমি এভাবে দখল করা হচ্ছে, বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় একটি খাল, অথচ সরকারি কর্মকর্তারা এটি উদ্ধারে কোনো ভুমিকা রাখছেন না।
সরেজমিনে দেখা গেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর থেকে একটি খাল খালিশপুর বাজারের পশ্চিমপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদে মিশেছে। এই খাল দিয়ে কানাইডাঙ্গ, রাখালভোগা, ফতেপুর, কৃষ্ণচন্দ্রপুর, পুরন্দপুর, সড়াতলা, গোয়ালহুদা সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ও গ্রামগুলোর মাঠের পানি কপোতাক্ষ নদে নামে। সাবেক রাষ্টপতি জিয়াউর রহমান এই খালে এসেছিলেন এবং খনন কাজের উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে খালটি জিয়া খাল বলে পরিচিত। এই খালের গোয়ালহুদা অংশে বেশ কয়েকটি স্থাপনা গড়ে উঠেছে। যেগুলো খালের উপর নির্মান করা হয়েছে। এই খালের উপর একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় খালের জায়গা দখল করে চাষাবাদ করা হচ্ছে। সর্বশেষ সড়াতলা গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন খালের জায়গা দখল করেছেন। সেখানে তিনি পাঁকা স্থাপনা করার চেষ্টা করেন।

স্থানিয়রা জানান, সাজ্জাদ হোসেন খালের পাড়ে কিছু জায়গা কিনে সেখানে বাড়ি নির্মান করেছেন। এরপর তিনি বাড়ির সঙ্গে একটি করাতকল স্থাপন করেন। আর এই করাতকল স্থাপন করতে খোলের মধ্যে পাঁকা পিলার তুলে ভবন নির্মান শুরু করেন। বিষয়টি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ গেলে তারা নির্মান কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের পর তিনি ভবন নির্মান বন্ধ করলেও ময়লা ফেলে খাল ভরাট করা হচ্ছে। খালের ধারে তার যে করাতকল রয়েছে সেটার সব ময়লা এই খালে ফেলা হচ্ছে। কাঠের গুড়া ফেলে খাল ভরাট করছেন সাজ্জাত হোসেন।
আমিনুর রহমান নামের এক ব্যক্তি জানান, হাইওয়ে সড়কের ধার ঘেষে যাওয়া এই খালটি শতাধিক পুট চওড়া। এটা সুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে গেলেও বর্ষা মৌসুমে তাদের এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের সমস্ত পানি কপোতাক্ষে নিয়ে যায়। খালের কারনে তারা জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পায়। মাঠে ঠিকমতো ফসল ফলে। অথচ সেই খাল দখল করা হচ্ছে। এই খাল বাঁচাতে না পারলে তাদের এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে, মাঠের ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাবে। খালটি বাঁচাতে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে সাজ্জাদ হোসেন জানান, ভুমি অফেসর পক্ষ থেকে নির্মান বন্ধ করলে তিনি আর কোনো কাজ করেননি। তাছাড়া খালের মধ্যে যে কাঠের ময়লা ফেলা হচ্ছে এগুলো তিনি পরিষ্কার করে দেবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, খালের মধ্যে যে অবৈধ স্থাপনা গড়ার চেষ্টা করা হয়েছিল সেটা তারা বন্ধ করেছেন। এরপর ময়লা ফেলে ভরাট করার চেষ্টা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

No comments

Powered by Blogger.