নেশার বুদ থেকে তরুণদের ফেরাতে হবে

 

তরিকুল ইসলামঃ

একটি জাতির উন্নতি নির্ভর করে উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা আর সময়ের সদ্ব্যব্যবহার করে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদেরকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার উপর সময়ের কাজ সময়ে না করলে বিপদের আশঙ্কা চিরন্তন প্রবাদে আছে, ' সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়'

 বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে আমরা কেমন যেন সময় জ্ঞানহীন হয়ে পড়েছি বিশেষ করে তরুণ সমাজের একাংশ প্রয়োজনের চাইতে অপ্রয়োজনে রাত জেগে থাকছে, সারারাত প্রযুক্তিতে বুদ হয়ে ডুবে থাকছে ফলে প্রতিদিনের কাজকর্মে রীতিমত ব্যাঘাত ঘটছে

আসুন কিছু নমুনা উল্লেখ করি - গত বছর একদিন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের একজন ডাক্তারের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সেদিন ডাক্তার সাহেল বলেছিলেন,"আজ ছয়জন হাসপাতালের বেডে অজ্ঞান হয়ে শুয়ে আছে, আজই এসেছে এই ছয়জন

"আচ্ছা কেন এমন হল -  জানেন কি ?

উনি জানালেন, "আসার কারণ হল - রাত তিনটা চারটা পর্যন্ত জেগে থাকে, সকালে তড়িঘড়ি করে না খেয়েই ঘুমন্ত অবস্থায় ক্লাসে আসে, তারপর .... তো আর কি হবে "

বিজ্ঞান গবেষনায় বলছে, নিয়মিত রাত্রিজাগরণ মানুষের স্মৃতি শক্তি কমিয়ে দেয়, চোখের জ্যোতি কমে যায় একথা সৃষ্টিকর্তা কুরআন মাজিদেও বলেছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানেও পর্যাপ্ত ঘুম আঁধারে ঘুমের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে রাতের অংশে অবশ্যই ঘুমের প্রয়োজন এবং অবশ্যই সেটা হতে হবে আঁধারে

 কিন্তু ইদানীং আমরা, বিশেষ করে তরুণ সমাজ রাত জেগে থাকে আর দিনের বেলায় বেশি ঘুমায় ধরনের অনেকেরই আমি দেখেছি যাদের কিছূ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে তাই অভ্যাসগুলি পরিবর্তন করা উচিত

অপর একটি মারাত্মক দিক হল, তরুণরা আজ নেশাগ্রস্থ (গাজা, ধুমপান, ফেইসবুকে মাত্রাতিরিক্ত স্ক্রলিং, চ্যাটিং, রাত-বিরাতে ফোনালাপ বা প্রেমালাপ ইত্যাদিতে আসক্ত) নেশার টান যেন সব বয়সের মাঝেই বিস্তার করতে শুরু করেছে এসবের নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন, নয়তো আগামীর ভবিষ্যৎ তরুণ সমাজ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে

 যদিও এসবের ব্যাপারে শিক্ষিত সমাজ তেমন কিছুই ভাবে না, তাছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক মা - বাবাই হয়ে পড়ছেন ভারসাম্যহীন প্রত্যেকেই যেন অন্য এক কাল্পনিক জগতে ভেসে বেড়ান পরিবারবারের সদস্যদেরকে কেউ সময় দিতে চায় না অনেক ক্ষেত্রে এমন ঘটনা অনেক উচ্চশিক্ষিত পরিবারেও দেখছি নিয়মিত তাহলে আর সন্তানদের দোষ কোথায়?

মানুষ মানুষকে ভালবাসবে এটাই স্বাভাবিক সেই ভালবাসা যেন প্রকাশ্য হয়, সামাজিক ধর্মীয় রীতিনীতির অধীন হয়৷ কিন্তু ইদানীং প্রেম ভালবাসার নামে রীতিনীতি বহির্ভূত কর্মকান্ডই সকল অঘটনের মূল নিয়ামক এসবের নিয়ন্ত্রণ অতীব জরুরী, অন্যথায় এহেন অপরাধ আর অভিশাপের ফল কাউকে না কাউকে ভোগ করতেই হবে, হতে পারে নিরীহ কাউকেও বিষয়গূলি নিয়ে সকলের চিন্তা গবেষণা করা উচিত

মাদক সন্ত্রাস অপর একটি বিষবৃক্ষ যার পেছনে অপসংস্কৃতির হাত রয়েছে, রয়েছে নোংরা রাজনীতির কু-প্রভাব আজকের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সকল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনটাই লক্ষ্যণীয় বিষয়ে সরকার, প্রশাসন সচেতন নাগরিক সমাজ সবাইকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন এই নাজুক অবস্থা থেকে সমাজ রাষ্ট্রকে বাঁচাতে সচেতনতার বিকল্প নাই প্রয়োজন নৈতিকতা আর ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করা

 * আসুন সচেতন হই সকলে

* সময়ের মূল্য দিতে শিখি

* যুব সমাজকে রক্ষা করি

মহান সৃষ্টিকর্তা সবাইকে হেফাজত করুন, সেই প্রত্যাশায়

 

লেখকঃ তরিকুল ইসলাম মাসুম

শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

No comments

Powered by Blogger.