শৈলকুপা আউশিয়া আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলছে অনিয়ম দুর্ণীতির মহোউৎসব


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-

ক্ষমতার দাপট আর নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে শৈলকুপা আউশিয়া আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলছে অনিয়ম দুর্ণীতির মহোউৎসব। নামে বেনামে রয়েছে সহকারি শিক্ষক, লাইব্রেরিয়ান ও অফিস সহকারি। ম্যানেজিং কমিটির প্রভাব দেখিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে সভাপতি পরিচয় দিয়ে প্রতিষ্ঠানের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে। নিয়োগ বিজ্ঞপির ছলচাতুরি করে আসছে ম্যানেজিং কমিটি। সকালে একপদ বিকেলে অন্য পদ দেখিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এই সুযোগে  হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রতিষ্ঠান। লাভবান হচ্ছে অন্যরা। 

খোজ নিয়ে জানা গেছে, শৈলকুপা আউশিয়া আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৫ সালে বিদ্যালয়টিতে আব্দুল বারিক নামের এক ব্যক্তি অফিস সহকারি পদে কর্মরত অবস্থায় মারা যান। পরে একই বছরে ওই পদে যোগদান করেন সাবিনা ইয়াসমিন নামের এক নারী।  কিন্তু ২০০৮ সালে সাবিনা ইয়াসমিনকে অফিস সহকারি পদ থেকে সরিয়ে লাইব্রেরিয়ান পদে মৌখিকভাবে চাকুরি দেওয়া হয়। পরে ২০১৫ সালে আবারও সাবিনা ইয়াসমিনকে মৌখিকভাবে সহকারি শিক্ষিকা পদে রাখা হয়। এ বিষয়ে সাবিনা ইয়াসমিন প্রতিবাদ করলে ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজসে চাপ সৃষ্টি করে আসছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। 

এছাড়াও প্রধান শিক্ষক কাজল রেখার নিয়োগের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আরও অভিযোগ উঠেছে  বৈশ্বিক মহামারি করোনা কালীন সময় যে সকল শিক্ষক নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে এসেছে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে অনিয়মিতদের নাম তালিকা করে পঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সাবিনা ইয়াসমিন অভিযোগ করে বলেন, আমি ২০০৫ সালে উক্ত প্রতিষ্ঠানে  অফিস সহকারি পদে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়ের সকল কর্মকান্ডে নিয়মিত অংশ গ্রহণ করে আসছি, যা প্রতিষ্ঠানসহ ওই এলাকার সকলে অবগত আছেন। ২০০৮ সালে আমাকে উক্ত পদ থেকে সরিয়ে প্রতিষ্ঠানের তৎকালীন সভাপতি মনোয়ার হোসেন মালিথার ২য় স্ত্রীকে অফিস সহকারি পদে বহাল দেখিয়ে আমাকে লাইব্রেরিয়ান পদে মৌখিকভাবে যোগদান করায়। পরে ২০১৫ সালে আবারও আমাকে উক্ত পদ থেকে সরিয়ে বর্তমান প্রধান শিক্ষক কাজল রেখার এক আত্মীয়কে নিয়োগ দেয়। সেসময় আমাকে লাইব্রেরিয়ান পদ থেকে সহকারি শিক্ষক পদে মৌখিকভাবে প্রতিষ্ঠানে রাখা হয়। আমি এ বিষয়ে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষিকে শাস্তি ও উক্ত বিষয়ের প্রতিকার চেয়ে ঝিনাইদহ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর মৌখিক অভিযোগ দাখিল করেছে।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক কাজল রেখা বলেন, সকল বিষয় আমার জানা আছে। আমি সবকিছুই সভাপতিকে জানিয়ে করেছি। এরমধ্যে অনেক কাজই ভুল হতে পারে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা কালীন সরকারি অনুদানের টাকা গুলো শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিনকে দেওয়া হয়নি। এটি আমার গুরুতর অনিয়ম হয়েছে। আমি এগুলো দ্রুতই সেরে ফেলবো। দয়া করে আপনার এই সংবাদটি পত্রিকায় প্রকাশ না করলে আমার জন্য ভাল হয়।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনোয়ার হোসেন মালিথা বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে সবকিছুই আমি নিয়ম তান্ত্রিকভাবে করেছি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়।

এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেব বলেন, এটা একটি নন এমপিও ভুক্ত প্রতিষ্ঠান। এসকল প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ একটু সুযোগ নিয়ে থাকে। তবে এ ব্যাপারে আমার কাছে এখনও পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। যদি আসে তাহলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


No comments

Powered by Blogger.