স্কুল বন্ধ তবুও জোর করে হাজিরা নেন প্রধান শিক্ষক

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ নাগরিকের দেহে মহামারি করোনা ভাইরাস সনাক্তের পর ১৪ মার্চ থেকে সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করে সরকার। কয়েক দফায় বাড়িয়ে আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গায়ের জোরে নিজ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের নিয়মিত আসা-যাওয়া বাধ্যতামূলক করেছেন ঝিনাইদহের হরিনাকু-ু পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ এসএসসি ভোকেশনালের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম। এজন্য তিনি প্রতিষ্ঠানে খুলেছেন হাজিরা খাতা। নিজ ক্ষমতাবলে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারিদের প্রতিদিন সকাল ১০ টার মধ্যে  উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার নির্দেশনা জারি করেছেন। আর নিজের ক্ষমতার বাহাদুরি দেখাতে শিক্ষকদের কঠোরভাবে এ নির্দেশনা মানতে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানে নির্দেশিত উপস্থিতির সময় পেরিয়ে গেলেই হাজিরা খাতায় সেই শিক্ষকের নামের পাশে লালকালি দিয়ে অনুপস্থিত লেখা হয় বলেও তারা জানান।

এবিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের এসএসসি ভোকেশনাল শাখার  ট্রেড ইন্সট্রাক্টর মোস্তাক আহাম্মেদ বলেন, মহামারি করোনা সচেতনতায় সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্টান বন্ধ থাকার পরেও নিয়মিত স্কুলে আসতে বাধ্য করা ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে বাধ্য করছেন ওই প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও যদি কেও সকাল ১০ টার এক মিনিট পরেও আসেন তাহলে হাজিরা খাতায় তার নামের পাশে লালকালি দিয়ে অনুপস্থিত লিখে রাখছেন। আবার ওই প্রধান শিক্ষকের পছন্দের কিছু শিক্ষক স্কুলে না আসলেও হাজিরা খাতায় তাদের স্বাক্ষরের ঘর ফাঁকা রেখে পরে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। যা সম্পূর্ন নিয়ম বহির্ভত।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম দম্বোক্তি প্রকাশ করে মিডিয়াকর্মীদের বলেন নিয়ম থাকুক বা না থাকুক আমার ইচ্ছায় আমি করেছি। আপনারা যা ইচ্ছা তাই করেন। 

ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম টানু মল্লিক বলেন,  শুনেছি প্রধান শিক্ষক  এসব অবৈধ কাজ করছেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাকে আমি মৌখিকভাবে এ বিষয়ে সতর্ক করেছি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্ত ফজলুল হক বলেন, নিয়মিত দাপ্তরিক কাজের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস খোলা রাখার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারি বা সহায়কদের জন্য এ নির্দেশনা। সব শিক্ষক বা কর্মচারিদের প্রতিষ্ঠানে আসার কোন নির্দেশনা নেই। যদি এ ধরণের কোন নির্দেশনা ওই প্রধান শিক্ষক দিয়ে থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, এ ধরণের কোন নির্দেশনা দেওয়ার এখতিয়ার প্রধান শিক্ষকের নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।



No comments

Powered by Blogger.