লড়াই করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে: গয়েশ্বর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট:


 নতুন বছরে স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ববোধ থেকে লড়াই করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, করোনার মতো শেখ হাসিনা ও প্রশাসনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আসুন রাজপথে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে লড়াই সংগ্রাম করে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি। যেভাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান দেশ স্বাধীন করার জন্য পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে লড়াই করে সফল হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানবন্ধনে তিনি এ আহ্বান জানান। ‘টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌর মহিলা দলের সভানেত্রী হাবিজা বেগম’র ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা ও তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা এবং দেশব্যাপী নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে’ এই শিরোনামে মানবনবন্ধন করে সংগঠনটি।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজ ২০২০ বছরের শেষদিন। আজকেও আমাদের কর্মসূচি করতে হচ্ছে। আগামীকাল পহেলা জানুয়ারি ২০২১ সাল। আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ সালে যদি প্রতিদিন প্রতিবাদ করি আজকে যা চলছে তা কমবে না। উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পাবে। এত ঘটনা ঘটছে একটি সংগঠন বা চারটি সংগঠনও যদি নানা স্থানে প্রতিবাদ করে তাহলেও সবার কথা বলা যায় না।

‘কত যে খবর আসে কাগজের পাতা ভরে, জীবন পাতার অনেক খবর রয়ে যায় অগোচরে’ বাংলা চলচ্চিত্রের এই গানের একটি লাইন উল্লেখ করে বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, টিভিতে অনেক খবর দেখেন, পত্রিকার পাতায় অনেক খবর পড়েন। তারপরও শতভাগের একভাগ খবরও জনসম্মুখে আসে না। কারণ শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রের সকল প্রশাসনযন্ত্র, রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান আছে সব একজনের আচলে বাঁধা।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, মানববন্ধন বা প্রতিবাদ করে মুক্তির পথ হবে না। আমাদের লড়াই করতে হবে। আজ এই মাস বিজয়ের মাসের শেষ দিন। যে বিজয় নিয়ে গর্ব করি সেই বিজয় কিন্তু লড়াই ছাড়া আসেনি। সংগ্রাম ছাড়া আসেনি ও রক্ত ছাড়া হয়নি। সেকারনেই আমাদেরকে জীবন যুদ্ধে যেমন করোনাকে উপেক্ষা করে ছোটাছুটি করি, তেমনি স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ববোধ থেকে করোনার মতো হাসিনাকে উপেক্ষা করে ও প্রশাসনের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে মাঠে ময়দানে ছোটাছুটি করতে হবে। তাছাড়া কিন্তু আমাদের পরিত্রাণ পাওয়ার অন্য কোনো পথ নেই।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ২৯ ডিসেম্বর কুত্তায় নিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর। গল্পের ছলে তিনি বলেন, আজ গণতন্ত্রও কুত্তায় নিয়ে গেছে। এখন ধরবেন কী ধরবেন না? এখন যদি বলেন কবিতার ভাষায় ‘কুকুরের কাজ কুকুর করেছে কামাড় দিয়েছে পায়, তাই বলে কী কুকুরকে কামনো মানুষের শোভা পায়?

তিনি বলেন, কোনো অধিকারই সংগ্রাম ছাড়া হয় নাই। বিএনপির তো সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। বিএনপির নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন ?প্রতিষ্ঠিত করেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি কী করেছেন লড়াই করেছেন। যুদ্ধ করেছেন। তিনি প্রথম পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। তার উর্ধ্বতন কমান্ডারকে গুলি করে হত্যা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ করেছেন। জিয়াউর রহমান শহীদ হওয়ার পরে নেতৃত্ব কে দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। রাজপথে মশাল হাতে ঢাকার অলিতে গলিতে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন।

নেতৃকর্মীদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর বলেন, আসুন সরকারটাকে নামানোর জন্য একটু চেষ্টা করি। চেষ্টা করলে সফলও হতে পারি, না হলে ব্যর্থও হতে পারি। কিন্তু চেষ্টা না করে সফলও হইলাম না ব্যর্থও হইলাম না। আর সবসময় ঈর্শ্বরের ওপর,আল্লাহর ওপরে ভরসা করলাম- আল্লাহ ছাড়া আর গতি নাই। না। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, কাপুরুষ এবং মূর্খরা অদৃষ্টের উপরে নির্ভর করে। আর বীর পুরুষরা নিজেদের অদৃষ্ট নিজেরা গড়ে তোলে। আসুন- এই বিএনপি এই জাতির অদৃষ্ট কিংবা জাতির ভাগ্য। যেমনি যার নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিলো, ঠিক আজকে সেই বিএনপিতে বেগম খালেদা জিয়া আছেন, তারেক রহমান আছেন। তাদের নেতৃত্বে আমরাও বীর পুরুষের মতো আমাদের ভাগ্য, দেশের ভাগ্য, গণতন্ত্রের ভাগ্য, নারী ও শিশুদের আগামী দিনের ভাগ্য আমরাই প্রতিষ্ঠিত করবো।

সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর পরিচালনায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, জেবা খান, রবিউল ইসলাম রবি, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সাবেক নেত্রী আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.