আসন্ন রমজানের রোযা পালনের সকল পস্তুতি বয়ে আনুক জান্নাতের অগ্রিম বার্তা

আলহাজ্ব এম.এ.কাদের-

লক্ষ কোটি শুকরিয়া আদায় করি সেই মহান রাব্বুল আলআমিন আল্লাহর, যিনি  আমাকে, আপনাকে, সারা পৃথিবী আসমান জমিন সহ সমস্ত জীবজন্তু সৃষ্টি করেছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা জিন এবং ইনসান (মানুষ) কে সৃষ্টি করেছেন শুধু মাত্র তাঁর ইবাদত করার জন্য। রোযাদারের রমজানের অগ্রিম প্রস্তুতি একজন ঈমানদারের বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে।  

মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, রোজা আমার জন্য এবং আমি নিজ হাতে রোজার প্রতিদান দিবো। রমজান মাসের এমন অনেক মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অন্য কোনো মাসে নেই। কুরআন-হাদিসের বিভিন্ন স্থানে রোজা পালনের উচ্চ মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা রয়েছে। মহান আল্লাহ এ মাসের রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসেই পবিত্র কুরআনুল কারিম নাজিল করা হয়েছে (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫)। এ মাসের ইবাদত বন্দেগির ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া 

সাল্লাম সাহাবাদেরকে সুসংবাদ দিতেন। রজব ও শাবান মাস জুড়ে রমজানের ইবাদত-বন্দেগির জন্য নিজেকে তৈরি করতেন, দোয়া পড়তেন এবং সাহাবীদেরকে দোয়া করতে বলতেন। রমজান মাসে রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হয়। এ মাসের জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ রাখা হয় এবং শয়তানকে বন্দী করে রাখা হয়। রমজানের রাত ও দিনে মুসলমানের দোয়া অনবরত আল্লাহর দরবারে কবুল করা হয়। কুরআনের ঘোষণায় এ মাসে রয়েছে বরকতময় লাইলাতুল কদর। এ মাসের প্রতি রাতেই ফেরেশতাগণ মানুষকে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আহ্বান করতে থাকে। পবিত্র রমজান মাসেই আল্লাহ তা’লা মুসলমানদেরকে প্রথম সমর অভিযান, বদরের যুদ্ধে বিজয় দান করেছিলেন। রমজান মাসে উমরা আদায় করলে নবীকরিম (সাঃ) এর সঙ্গে হজ পালনের সাওয়াব পাওয়া যায়। সুতরাং যদি কেউ পবিত্র রমজান মাসের রোজা অস্বীকার করে, তাহলে সে ইসলাম ধর্মকে অস্বীকারকারী হিসেবে পরিগণিত হবে।

মহান আল্লাহ তা’লাকে সন্তুষ্ট করার যতগুলি ইবাদত আছে তার মধ্যে সহজ এবং অন্যতম ইবাদত হচ্ছে রোযা। আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ পাওয়ার আর যতগুলি ইবাদত আছে, ঐ ইবাদতগুলো নিখুঁতভাবে পালন করে আল্লাহকে খুশি করা অনেকটা কঠিন কাজ। মহান আল্লাহকে পরিপূর্ণভাবে তাঁর আনুগত্যে আছি , এটাই একজন রোযাদার রোযা থেকে সহজেই প্রমান দিতে পারেন। একজন রোযাদার এই এপ্রিল মাসের খরতাপ, গরমের মধ্যে তৃষ্ণায় কাতর হয়ে জাহান্নামের ভয়ে জান্নাতের আশায় রোজা পালন করেন শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য। 

একজন রোজাদার রোযারেখে তৃষ্ণায় কাতর হয়ে এত কষ্টের মধ্যে ইচ্ছা করলে ঘরের মধ্যে গোপনে একাকী তাঁর তৃষ্ণা নিবারন করতে পারেন। কিন্তু একমাত্র আল্লাহর হুকুম পালনের জন্যই তাকওয়ার কারনে অধিক কষ্ট স্বীকার করে তিনি রোযা রাখেন। আর এই কারনেই আল্লাহ তায়ালার বুঝতে বাকি থাকে না যে, বান্দা আমাকে বিশ্বাস করে রোযা রাখছে। আল্লাহ তায়ালা রোজাদারদের উপর খুশি হয়ে কঠিন হাসরের ময়দানে নিজহাতে হাউজে কাওসারের পানি পান করিয়ে চিরতরে পিপাসা নিবারন ও জান্নাত দিয়ে পুরস্কৃত করবেন।

আমরা মুসলমান, যাঁরা আল্লাহকে বিশ্বাস করি পরকালে কঠিন শাস্তির ভয়ে ও বেহেস্তে অসীম সুখ, অনাবিল আনন্দ পাওয়ার সহজ ইবাদত আসন্ন পবিত্র রমযানের রোযা। আসন্ন রমজানে রোজা পালনের প্রস্তুতি সকলের জন্য বয়ে আনুক জান্নাতের অগ্রিম বার্তা।


সাংবাদিক ও কলামিষ্ট                                                                    

    Email:makader958@gmail.com                                                          

                                                     


No comments

Powered by Blogger.