সনাক্তের পর বাড়িতে অবস্থান, করোনা হাসপাতালে ভর্তিতে অনীহা হরিণাকুন্ডুতে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৪ বৃদ্ধর মৃত্যু
এম এ কবীর,ঝিনাইদহ -
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে উপজেলায় করোনায় ৭ জনের মৃত্যু হলো। উপজেলাতে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে আটজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করায় জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। আট জনই করোনা আক্রান্ত হওয়ার রেজাল্ট পজেটিভ জেনেও তারা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহন না করে বাড়িতে ফিরে আসে। এতে তারা নিজের মৃত্যু নিশ্চিত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসিকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পৌর এলাকার মান্দারতলা গ্রামের শুকুর আলী(৭১), বুধবার রাত ১০ টার দিকে নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কুলবাড়িয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন মালিতা (৬২)। বুধবার উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের রহিমপুর স্কুল পাড়ার আব্দুস সাত্তার (৭২) ও নারায়ণপুর গ্রামের হাজী মনির উদ্দিন (৯২) উভয়ই করোনা আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।
হরিণাকুন্ডু উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা মঈন উদ্দীন আহমেদ জানান, মৃত লাশের পাশে সারা রাত ধরে অসহায় স্ত্রী ছাড়া আর কেউ অবস্থান করেনি। প্রতিবেশী কিংবা অন্য কেউ মৃতের বাড়িতে সহানুভূতিও প্রকাশ করেনি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দাফন কমিটি মৃতের বাড়ি পৌঁছে মরদেহের দাফন সম্পন্ন করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জামিনুর রশিদ জানান, করোনা আক্রান্ত হওয়ার রেজাল্ট পজেটিভ জেনেও তারা করোনা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহন না করে বাড়িতে চিকিৎসা নেন। মৃত চারজনের বাড়িসহ আশেপাশের অন্তত ৫০টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য ২৪ ঘণ্টায় হরিণাকুন্ডু নতুন ২৭ জনসহ সাতদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৬২ জন। ১২৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। পরিক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪৯ দশমিক ২০ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত উপজেলায় ৮১৩ জনের করোনা পরিক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ২১৭ জনের।
এ ব্যাপারে উপজেলাতে কোভিড নিয়ন্ত্রণে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা বাধ্যতামূলক চিকিৎসা সেবা গ্রহণ নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগসহ জনপ্রতিনিধিবৃন্দ কার্যকর ভূমিকা রাখা জরুরী বলে মৃতের প্রতিবেশীরা জানান।
No comments