৩০ বছর আগে মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করে জমি অধিগ্রহনের টাকা উত্তোলন


এম এ কবীর, ঝিনাইদহ থেকে-

৩০ বছর আগে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিসহ ১১ জনের স্বাক্ষর জাল করে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া মৌজার জমি অধিগ্রহনের টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া গ্রামের মৃত আফছার উদ্দিন খাঁর ছেলে মহিউদ্দিন খাঁসহ তার ১১ ভাই সংবাদ সম্মেলন করেন। অন্যদিকে প্রতিপক্ষ আব্দুল মতলেব খার সন্তানেরা পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ২৮৪ দাগে কেবল তাদেরই জমি রয়েছে। মহিউদ্দীন খাঁর দাবীকৃত জমি সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানী অধিগ্রহন করে নিয়েছে। এদিকে   লিখিত বক্তব্যে মহিউদ্দিন খাঁ অভিযোগ করেন মৃতব্যক্তিসহ ১১ ভাইয়ের সাক্ষর জালিয়াতি করে জমি অধিগ্রহনের টাকা তুলে নেয়ার পরও অবশিষ্ট জমির সীমানা পিলার উঠিয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই সাথে সামাজিক যোগাযোগ 

মাধ্যম ফেসবুকে আমাদেরকে সন্ত্রাসী উল্লেখ করে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয় ১৬০ নং ধানহাড়িয়া মৌজায় আর এস চুড়ান্ত ৫২ নং খতিয়ানে ২৮৪ দাগে ৯৬ শতক জমি ছিল। তার মধ্যে আমার পিতার দেয়া আমার সৎ ভাই আবু বক্কর ও আব্দুল মতলেব খাঁর নামে দলিলকৃত ৭৯ শতক জমি রয়েছে। বাকি ১৭ শতক জমি আমাদের ১১ ভাইয়ের নামে। কিন্তু আমার সৎ ভাই আবু বক্কর ও আব্দুল মতলেব খাঁ একটি গ্যাস কোম্পানীর কাছে আমাদের না জানিয়ে জমি বিক্রি করে আমাদের সাক্ষর জাল করে ক্ষতি পূরণের সরকারী অর্থ হাতিয়ে নেয়। ১৯৮৪ সালে আব্দুল কুদ্দুস খাঁ মারা যান। অথচ ২০১৪ সালে তার সাক্ষর জাল করে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। এছাড়া বাকি ১০ ভাইয়ের সাক্ষরও নকল করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহের বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মামলা নং-৩০৩/২০। মামলার সমন জারি হওয়ার পর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আপোষ রফার পর সৎ ভাই আবু বক্কর ও আব্দুল মতলেব খাঁকে ৭৯ শতক জমি বুঝিয়ে দিয়ে বাকি ১৭ শতক জমিতে পিলার পুতে দেয়া হয়। কিন্তগত ২৩ জুন মিমাংসাকৃত ১৭ শতক জমির পিলার উপড়িয়ে জোর পূর্বক দখল করে নেয়া হয়। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সম্মানীয় ব্যক্তিদের নামে অশ্লীল ভাষায় মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এঘটনার সঙ্গে সৎ ভাই আব্দুল মতলেব, শের আলী খাঁ, মুরাদ আলী খাঁর ছেলে দেলোয়ার হোসেন দুলু, কামাল খাঁ ওরফে ফিটু, বিপুল খাঁ জড়িত। এদিকে পোড়াহাটী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী  সিরাজুল ইসলামের এক প্রত্যায়নপত্র থেকে জানা গেছে ১৬০ নং ধানহাড়িয়া মৌজার আরএস ৫২ নং খতিয়ানের ২৮১ ও ২৮৪ দাগে ৮০ শতক জমির মূল মালিক হচ্ছে আব্দুল মতলেব খাঁ। তিনি ১৪২৮ বাংলা সন পর্যন্ত খাজনাও দিয়েছেন। পোড়াহাটী ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২৮৪ দাগের মোট ৩৩ শতক জমি অধিগ্রহন করা হয়। এরমধ্যে আব্দুল মতলেব খাঁর ৮ শতক, আবু বক্কার খাঁর ১৫ শতক ও আবু বকর খাঁর অন্যজনের কাছে বিক্রিত ১০ শতক জমি। বিষয়টি নিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম ফিটু ও দেলোয়ার হোসন খাঁ দুলু জানান, সাক্ষর জালের খবরটি তারা বলতে পারবেন না। ২০১৪ সালের ৭ জুলাই তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আলীমের দেয়া প্রত্যায়নে ১১ জনের সাক্ষর ছিল। সেটা জাল কিনা তা তদন্তের বিষয়।


No comments

Powered by Blogger.