কালীগঞ্জে শিশু ধর্ষনের ঘটনায় ধর্ষক গ্রেপ্তার॥ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

 স্টাফ রিপোর্টার-

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ছয় বছরের কন্যা শিশু ধর্ষনের অভিযোগে সেলিম হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তার নিজ গ্রাম উপজেলার সুবিতপুর থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক সেলিম হোসেন ওই গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে।

এদিকে বুধবার সকালে ধর্ষক সেলিমকে আটক ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে ঝিনাইদহ জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। শহরের পায়রা চত্তরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে সাংস্কৃতিক কর্মী ও জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেয়। এসময় বক্তব্য রাখেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট জেলা শাখার সভাপতি শান্ত জোয়ার্দ্দার, সাধারণ স¤পাদক বাবুল আক্তার লাল্টু, মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান দিপ্তী রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাংগঠনিক স¤পাদক অমিয় মজুমদার অপু, নির্বাহী সদস্য এমএ সালাম, শাহীনুর আলম লিটন, জেলা নাট্য সমন্বয় পরিষদের সভাপতি রুবেল পারভেজ, সাধারণ স¤পাদক তারেক হোসেন পল্লব এবং উই এর নির্বাহী পরিচালক শরিফা আক্তারসহ অন্যান্যরা। গত ২৮ মে শুক্রবার প্রতিবেশি সেলিম হোসেনের বাড়িতে পান আনতে গিয়ে ধর্ষনের স্বীকার হয় ছয় বছরের শিশু কন্যা। পরে মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি এসে সবাইকে জানালে ডাক্তার বা থানা পুলিশের পরিবর্তে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারের দারস্থ হয় দরিদ্র পরিবারটি। চারদিন পর স্থানীয় সংবাদকর্মী ও থানা পুলিশের সহযোগীতায় মামলা করে ভিকটিমের পরিবার।

ভিকটিমের মা মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ঘটনার দিন পান আনার জন্য আমার শিশু কন্যাকে পাশের বাড়ির সেলিম চাচার বাড়িতে পাঠায়। মেয়েকে আসতে দেরি দেখে তিনি এগিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর মেয়েকে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরতে দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করি। দেখি তার পাজামাটি রক্তে ভেজা। সেলিমের বাড়িতে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তখনও তিনি ঘামছিলেন। ভিকটিমের মা আরো জানান, পাড়া প্রতিবেশির কথা মতো পরে আমি বিষয়টি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টুকে জানায়।

অভিযুক্ত মোহাম্মদ সেলিম হোসেন ধর্ষনের কথা প্রথমে অস্বীকার করেন। পরে জানান, সালিসে ৮০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা হয়েছে। তবে ধর্ষন না করেও কেন জরিমানা দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে সেলিম জানান, এ নিয়ে থানা পুলিশ করার কথা ওঠে। তাছাড়া চেয়ারম্যানের কথা আমি ফেলতে পারিনি, তাই টাকা দিয়েছি। সুবিতপুর গ্রামের মেম্বর আবুল হাসেম জানান, ঘটনাটি গ্রামের মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পাড়ার কারনে মঙ্গলবার সকালে আমি শুনেছি যে একটি শিশু ধর্ষিত হয়েছে। কিন্তু পরিবারটি অসহায় হতদরিদ্র হওয়ায় থানা পুলিশের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে রাখালগাছি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টু মঙ্গলবার বিকালে জানান, ভিকটিমের পরিবার আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের থানায় যেতে বলেছিলাম। তবে, ভিকটিমের পরিবার ডাক্তারী পরীক্ষা বা থানায় যেতে অপরাগত প্রকাশ করেছিল। পরে কি হয়েছে তা আমি বলতে পারবো না। তবে পরিবারটির জন্য আইনি কোন সহযোগীতা প্রয়োজন হলে আমি করবো।

বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, এ ঘটনায় ভিকটিমের মা জোসনা খাতুন বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে কালীগঞ্জ থানায় ধর্ষক সেলিমকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। রাতেই ধর্ষক সেলিম হোসেনকে আটক করা হয়।



No comments

Powered by Blogger.