পান চাষে সফল আমজাদ
মেয়ের বিয়েতে ব্যয় করেছেন ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা। গ্রামে নির্মাণ করেছেন ১০ থেকে ১২লাখ টাকা ব্যয়ে পাঁকা-ঘর। চলাচল, গ্রামের যেকোনো স্বচ্ছল ব্যক্তির তুলনায় খারাপ নয়। পান চাষে এমন অভাবনীয় স্বচ্ছলতা পেয়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মস্তবাপুর গ্রামের পানচাষী আমজাদ আলী গাজী।
আমজাদ আলী জানান, প্রায় ১৫বছর পূর্বে ১০ কাঠা জমিতে পানের চাষ শুরু করেন। লাভজনক হওয়ায় আরও দেড় বিঘা জমিতে পান চাষ করেন। বর্তমানে তার ২ বিঘা জমিতে পানের চাষ রয়েছে। ২ বিঘা জমিতে দেশিয় ভাবনা জাতের পান, ইন্ডিয়ান এলসি জাতের পান ও ঝাল পানের চাষ করেছেন। তিন জাতের পানেরই রয়েছে ব্যপক চাহিদা। নিয়মিত সার, ঔষধ ও সঠিক পরিচর্যায় তার ক্ষেতের পান সাইজে বড় ও বেশ মোটা হয়।
আমজাদ জানান, একসময় তিনি বেশ গরীব ছিলেন। পরের ক্ষেতে কামলা খেটে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। পান চাষের পর থেকেই সেই অবস্থার পরিবর্তন হতে হয়েছে। এখন বেশ স্বচ্ছলতার সাথেই জীবন-যাপন করছেন। কয়েক বছর আগে একমাত্র মেয়ের বিয়েতে ব্যয় করেছেন ৫ থেকে ৭লাখ টাকা। গ্রামে করেছেন ১০ থেকে ১২লাখ টাকার পাঁকা-ঘর। দুই ছেলে মাধ্যমিকে পড়াশুনার পর বাবার মতো পান চাষ করছেন।
পানচাষ পদ্ধতি নিয়ে তিনি জানান, ভাবনা জাতের পান পৌষ-মাঘ মাসে লাগাতে হয়। বিনা চাষে পানের গেঁড় লাগাতে হয়। পানের বরজের চারপাশ ও উপরের অংশ ঢেকে দিয়ে ছায়া করতে হয়। লাগানোর তিন থেকে চারা মাস পর থেকে পান তোলা যায়। স্থানীয় বাজারে বারোমাস পান বিক্রি করা যায়। ফাল্গুন চৈত্র মাসের পান ঢাকায় বিক্রি করা হয়।
এলসি পান আষাঢ় মাসে লাগাতে হয়। এ পান চাষে একটু বেশি পরিচর্ষা করতে হয়। সপ্তাহে অন্তঃত দুইবার কিটনাশক স্প্রে করতে হয়। পান গাছের প্রধান খাবার খৈল। যা বর্ষাকালে প্রয়োগ করা হয়। ফাল্গুন চৈত্র মাসে আর খৈল প্রয়োগ করতে হয় না।
এলসি পানের দাম সব সময় বেশি থাকে। ঝাল পানেরও রয়েছে বেশ চাহিদা। চাষাবাদ পদ্ধতি প্রায় একই। তবে শীতকালে ঝাল পান ঝরে যায়। বর্তমানে পানের বাজার খুবই কম। যার কারণে লাভ খুব একটা বেশি হচ্ছেনা। ফাল্গুন-চৈত্রমাসের সময় পানের দাম বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা করছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এনায়েত কবীর জানান, এ অঞ্চলের চাষীরা পান চাষ করে বেশ সফল। তবে চাষীরা রাসায়নিক সার ব্যবহার শুরু করায় অনেকের পানের পড় পঁচে যাচ্ছে। তাই আমরা চাষিদের পানের বরজে ভার্মি কম্পোষ্ট সার প্রয়োগে উৎসাহিত করে যাচ্ছি।
No comments