ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রকৌশলীর অডিও ক্লিপ ফাঁস


নাইমুর রহমান, ইবি প্রতিনিধি-

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রকৌশলীর সাথে ছাত্রীর আপত্তিকর কথোপকথন ফাঁস হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ৬মিনিট ২১ সেকেন্ডের কথোপকথনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী 


আলিমুজ্জামান টুটুল ওই ছাত্রীকে পড়ালেখা শেষে চাকরির আশ্বাস দেয়। এছাড়াও খুশি করার মতো 


ছবি, বোরকা ছাড়া ছবি ও যখন ছবি চাইবো তখনি ছবি দিবা’ এমন কথোপকথন শোনা যায়। এ নিয়ে সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।  প্রতিবেদকের কাছে ৬মিনিট ২১ সেকেন্ডের অডিও ক্লিপটি হাতে এসেছে।

প্রকৌশলী টুটুল ও ছাত্রীর কথোপকথন তুলে ধরা হলোঃ  

কই গেলা? কই গেলা? আমারে ছাড়িয়ারে বন্ধু কই গেলারে? রঙ্গিলা রঙ্গিলা রঙ্গিলারে
প্রকৌশলী টুটুল: আপনি তো খবর নিলেন না!
মেয়ে: আমি প্রচুর খবর নিয়েছি, আপনি তো নেননি!
প্রকৌশলী টুটুল: কোন খবরই নেননি। আপনি তো মিথ্যা কথা বললেন।
মেয়ে: আপনি একটা সেলফিস।
প্রকৌশলী টুটুল: আমি সেলফিস না আপনি সেলফিস।
মেয়ে: আমি সেলফিস না কারণ আমি আপনাকে রাতে ও দুপুরে ফোন দিয়েছিলাম।
আজকে আপনিও দেননি। গতকালকে তো আমি দুইবার দিয়েছিলাম।
প্রকৌশলী টুটুল: একটা ছবি চাইলাম ছবি পাইলাম না, মনের কষ্ট থেকে গেলো।
মেয়ে: আহারে এতোগুলা যে পিকচার দিলাম এগুলা কি হলো?!
প্রকৌশলী টুটুল: তুমি ডিলিট করতে বলছিলা এজন্য ডিলিট করে দিলাম।
মেয়ে: এটা কিন্তু ঠিক না। আমি যথেষ্ট ছবি দিয়েছি।
প্রকৌশলী টুটুল: আমি যখন চাইব তখন ছবি দিবা।
মেয়ে: ছবির সঙ্গেতো কথা না বলে থাকা।
প্রকৌশলী টুটুল: আমার সঙ্গে কথা বলায় দিবা।
মেয়ে: আগে আম্মুর সঙ্গে কথা বলি তারপর কথা বলা বাদ দিই।
প্রকৌশলী টুটুল: বলবা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলি, তাহলে বলবে অন্ততপক্ষে একজন ভালো মানুষের সহোযোগীতা পাওয়ার মতো কাউকে পাইছিস।
মেয়ে: আম্মুকে বিষয়টি জানাইনি তবে তবে শীঘ্রই জানাবো।
প্রকৌশলী টুটুল: জানাইয়ে আমার সঙ্গে কথা বলায় দিবা।
মেয়ে: আচ্ছা।
প্রকৌশলী টুটুল: কি করো এখন?
মেয়ে: আমি কিছুই করিনা।
প্রকৌশলী টুটুল: তুমি যখন নিজে থেকে খোঁজ নিবা তখন আমি খুশি হবো। আর আমি যখন বারবার খোঁজ নিব তখন আমি কিন্তু মন খারাপ করব।
মেয়ে: না না মন খারাপ করার দরকার নেই। আমি মনে করি আপনি ব্যাস্ত থাকেন এজন্য ফোন দেই না।
প্রকৌশলী টুটুল: মিসকল দিবা ছোট্ট একটা মেসেজ দিবা। ফেসবুকে মেসেজ দিতে তো টাকা লাগে না।
মেয়ে: আচ্ছা দিবোনি।
প্রকৌশলী টুটুল: এখন দুটো ছবি দাও সেলফি তুলে।
মেয়ে: আমি যখন যেটা চাব তখন সেটা করবা। একটাই অনুরোধ অন্য কোনো অনুরোধ নাই।
মেয়ে: এখন অনলাইনে আছেন।
প্রকৌশলী টুটুল: হ্যা অনলাইনে আছি।
মেয়ে: আপনি বাসায় গিয়ে ফ্রি হয়ে তখন।
প্রকৌশলী টুটুল: আমি এখন চাচ্ছি তুমি এখনই দিয়ে দাও।
মেয়ে: এখন।
প্রকৌশলী টুটুল: যেমন আছো তেমনভাবে দাও। তোমার সাজগোজের কিচ্ছু করার দরকার নাই।
মেয়ে: আমি সাজগোজ করিও না তেমন।
প্রকৌশলী টুটুল: হুম। তোমার বন্ধুকে একটা ছবি দিবা। ছবি দেখে বন্ধু খুশি হবে। একদম বোরকা মোরকা পড়ে ঢেকেঢুকে এরম ছবি দিলে তো কোনো ই নাই।
মেয়ে: তাই।
প্রকৌশলী টুটুল: খুশি করার মতো ছবি দিবা।
মেয়ে: ওহহ।
প্রকৌশলী টুটুল: তুমি নিজে বন্ধু চেয়ে নিছো আর আমি বোন চেয়ে নিয়েছি।
মেয়ে: খুশি করার মতো ছবি বলতে কেমন ছবি হবে।
প্রকৌশলী টুটুল: সেটা আমি কিছু বলবনা তোমাকে।
মেয়ে: ঠিক আছে তাই হবে।
প্রকৌশলী টুটুল: এক্ষুণি দাও।
মেয়ে: আচ্ছা।
প্রকৌশলী টুটুল: যখন কাছে চাবা তখন পাবা। তোমার সাথে কথা হোক না হোক। তুমি যেদিন বলবা আমি পাস করেছি জব দেন। সেদিন থেকে চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ খুব দ্রুতই দুই মাসের মধ্যে একটা জব দেওয়ার। এ পর্যন্ত ৬-৭ জনকে জব দিয়েছি। তুমি যব পাবা যদি আমি বেঁচে থাকি।
মেয়ে: আচ্ছা মনে রাখলাম। আপনি বেঁচে থাকতে তো আমকে কোনো কিছু নিয়েই টেনশন করতে হবে না।



প্রকৌশলী টুটুল: টেনশন করার দরকারও নাই।
মেয়ে: সেটাই তো করতেছিনা আপনি যতদিন আছেন। আপনি তো অলরেডি আছেন।
প্রকৌশলী টুটুল: আমি বলব এটা তোমার বড় একটা সাপোর্ট। আমার মতো পাগলা মার্কা মানুষ তেমার লাইফের পাশে আছে।
মেয়ে: আই এম সো লাকি ।
প্রকৌশলী টুটুল: লাকি না তবে এই মানুষের দ্বারা কারও কোনো ক্ষতি হয় না এরকম একটা পাগল মানুষ। একটা মানুষ হাত বুলায় দিলে মনে করে যে কতো আপন।
মেয়ে: নিজেকে নিয়ে ভেবে কি হবে অন্যের উপকার করতে হয় এতেই সুখ।

এদিকে কোরআন, জায়নামাজ, তসবিহ, বৃক্ষ ও বিতরণসহ বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করে টুটুল। এগুলোর নাম করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

অডিও কথোপকথনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী অলিমুজ্জামান টুটুলের সাথে মুঠোফোনে বারংবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি ফোন বন্ধ করে রেখেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে কুষ্টিয়ার একাধিক ছাত্রীসহ কয়েকজন নারীর সঙ্গে মেলামেশা ও ভিডিওচিত্র ধারণের মামলা হয় টুটুলের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। পরববর্তীতে তিনি ছাড়া পায়।

No comments

Powered by Blogger.