ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বেতন বাড়ানোর দাবি তাই নৈশ প্রহরীকে অব্যাহতি
বেতন বাড়ানোর দাবি নিয়ে অনশন ও আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ নলডাঙ্গা পোষ্ট অফিসের নৈশ প্রহরী ফরিদ উদ্দীনকে চাকুরী থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ ডিসেম্বর পোষ্ট অফিসের মাধ্যমেই তার ওই অব্যাহতি পত্রটি হাতে পায়। ঝিনাইদহ ডাক বিভাগের পরিদর্শক আফিয়া খাতুন স্বাক্ষরিত গত ১৫ ডিসেম্বর ডাক বিভাগের এক প্যাডে ইডি নৈশ প্রহরী ফরিদ উদ্দিনকে ওই ’পুট অব ডিউটির’ আদেশটি দেন।
তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারী তথ্য, সরকারী সম্পদ নিরাপত্তা ও অসাদচারনের দায়ে ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যাবস্থাটি নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১৪ ডিসেম্বর সারারাত ডিউটি শেষে ফরিদ উদ্দিন পোষ্ট অফিসের মধ্যেই ছিল। সকালে অফিসের অন্য কর্মচারীরা এসে তাকে দরজা খুলতে বললেও সে দরজা না খুলে বেতন না বাড়ালে আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে অনশন করতে থাকে। পরে কালীগঞ্জ থানার পুলিশ এসে অফিসের দরজা খুলে নৈশ প্রহরীকে বের করে।
নৈশ প্রহরী ফরিদ জানায়, বেতন বাড়ানোর দাবী করায় তাকে অন্যায়ভাবে চাকুরী থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। সরকারীভাবেই গত ২০/০৬/২০ ইং তারিখে তার নিয়োগ হয়। কিন্তু চাকুরীর নিয়মকানুন বা শোকজ নোটিশ না করেই কর্তৃপক্ষ তাকে একতরফা ভাবে ওই শাস্তি দিয়েছে। এটা তার উপর অন্যায় করা হয়েছে। সে জানায়, তার বেতন মাত্র ৪ হাজার টাকা। যা দিয়ে ৭ সদস্যর সংসারে ভরনপোষন চালাতে হিমশিম খাচ্ছিল। তাই সে ক্ষোভে দুঃখে অনশন করেছিল। ফরিদ আরো জানায়, ভিটেবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। বর্তমানে দ্র্ব্যমূল্যের উবর্ধগতির বাজারে রোগ শোকসহ সংসারের যাবতীয় খরচ মেটাতে না পারাতে সে ওইদিন অফিসের মধ্যেই অনশন করেছিল।
নৈশ প্রহরী ফরিদের অব্যহতির বিষয়টি জানতে পুট অব ডিউটি আদেশ পত্রে স্বাক্ষরিত ঝিনাইদহ ডাক বিভাগের পরিদর্শক আফিয়া খাতুনের ০১৭২৯-৫১২১ নং মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ নলডাঙ্গা পোষ্ট অফিসের পোষ্ট মাষ্টার আব্দুল মালেক জানান, নৈশ প্রহরীর পুট অব ডিউটির আদেশ পত্রটি তার দপ্তরে এসেছে। তবে, কেন বা কোন অভিযোগে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা পত্রের স্বাক্ষরিত কর্মকর্তাই ভাল বলতে পারবেন। আর কোন শোকজ ছাড়াই চাকুরী থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া যায় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ইডি কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রিয় কমিটির সাধারন সম্পাদক এম এ হাকিম বলেন, বেতন বাড়ানোর দাবী তোলা কোন অপরাধ হতে পারে না। কালীগঞ্জের ফরিদ উদ্দিন নামে এক নৈশ কর্মচারীকে সাময়িক কর্মচুত্যর কথা তিনি শুনেছেন। তবে কি কারনে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে বিষযটি জেনেই সংগঠন তার ব্যাবস্থা নিবেন বলে জানান।
No comments