ঝিনাইদহের মহেশপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইমিটেশনের গহনা তৈরি, বিক্রি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়
ফয়সাল আহমেদ, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহের মহেশপুরে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইমিটেশনের গহনা তৈরির কাজ। ছোট বড় কারখানার পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামের নারী-পুরুষ নিজেদের হাতের নিপূণ ছোয়াই তৈরি করছেন কানের দুল, সিতাহার, হাতের বালা সহ হরেক রকমের গহনা। তবে নতুন ডিজাইনের ভালো মানের গহনা তৈরির মাধ্যমে বিশ্ব বাজার ধরতে পারলে এ শিল্প দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলছে বিসিক কর্মকর্তার দাবী করে।
ঝিনাইদহের সীমান্তবর্তী উপজেলা মহেশপুরের নওদা গ্রামের বাসিন্দা ইমরান হোসেন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপকরণ সংগ্রহ করে তৈরি করছেন বিভিন্ন ডিজাইনের কানের দুল। প্রায় ১৫ বছর ইমিটেশনের গহনা তৈরি করছেন তিনি। তার বাড়িতে ১০ জন কারিগরের কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে। এখন তার মাসিক আয় গড়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
১৯৯৮ সাল থেকে মহেশপুরে প্রথম যাত্রা শুরু হয় ইমিটেশন গহনা তৈরির কাজ। ঝিনাইদহের মহেশপুরে প্রতি বছর গড়ে ১৬ কোটি টাকার ইমিটেশনের গহনা তৈরি করা হয়। কানের দুল বেশী তৈরি করা হলেও খুবই অল্প পরিসরে হাতের বালা, সিতাহার, নেকলেস তৈরি করা হয়।
ইমরান হোসেন জানান, শুধু আমি না এভাবে উপজেলার নওদা গ্রাম, বৈচিতলা, জলিলপুর, মহেশপুর পৌর এলাকা সহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৪ হাজার পরিবার বিভিন্ন কারখানা ও ব্যক্তিগত ভাবে জড়িত ইমিটেশনের গহনা তৈরির সাথে। সাধারনত গহনা তৈরির জন্য তার, পাত, ডাইস, পুথি, চেন, রেজি, পাইন সহ অন্যান্য উপকরণ স্থানীয় বিভিন্ন দোকান এবং কারখানা মালিক থেকে ক্রয় করেন কারিগররা। এরপর ডিজাইনের উপর ভিত্তি করে ঝালাইয়ের কাজ শেষে রং করে বিক্রির উপযোগী হয় ইমিটেশনের গহনা। পুরুষের পাশাপাশি সংসারের কাজ সামলিয়ে নারীরাও তৈরি করেন ইমিটেশনের গহনা। যা আয় হয় তা দিয়ে ভালোই চলে তাদের সংসার। এখানে তৈরি ইমিটেশনের গহনা সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। সরকার যদি কারিগরি ও আর্থিক সহযোগীতা করে তাহলে বিদেশে রপ্তানী সম্ভব বলে মনে করে ব্যবসায়ীরা।
এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম জানান, আমার যানামতে পৌর এলাকার প্রায় ৪ হাজার পরিবারের মানুষ বিভিন্ন কারখানায় ইমিটেশনের গহনা তৈরির সাথে জড়িত আছে। এলাকার সাধারন মানুষ ইমিটেশনের গহনা তৈরির কারখানায় কাজ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছে।
ঝিনাইদহ বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক সেলিনা রহমান জানান, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) এর এই কর্মকর্তা বলছেন, দেশের অভ্যন্তরে বাজার ব্যবস্থা আরো সম্প্রসারিত হলে এবং যদি গার্মেন্টস পণ্যের মত বিশ্ব বাজার ধরা যায় তাহলে দেশের অর্থনীতিতেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে এই শিল্প।
No comments