কালীগঞ্জে উড়ন্ত সেতু নির্মাণ কাজে যথাযথ নিরাপত্তা না থাকায় দুর্ঘটনার শঙ্কা

 


শফিকুল ইসলাম,স্টাফ রিপোর্টার -

➡️ নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই কাজ শুরু

➡️ কর্তৃপক্ষ বলছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট 

➡️ যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশংকা 

➡️ জননিরাপত্তার বিষয়টিও নজরে নেই পৌর প্রশাসনের 

নির্মানাধীন সড়কের সাইনবোর্ডে  সাঁটানো থাকে "নিরাপত্তাই প্রথম"(সেফটি ফাস্ট)। কিন্তু নির্মাণ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এই "অমীয় বাণী"কালীগঞ্জে মহাসড়ক নির্মাণে দায়িত্বশীলদের গাফলতিতে অনেকটাই অকার্যকর। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ  বাসটার্মিনাল এলাকায় চলমান সড়ক নির্মাণে জনসাধারণের নিরাপত্তার চিত্রই তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। প্রায় মাসখানিক ধরে কালীগঞ্জ বাস টার্মিনালের সমুদয় জায়গা জুড়ে  শুরু হয়েছে উড়ন্ত সেতুর নির্মাণ কাজ। ঝিনাইদহ যশোর জাতীয় মহাসড়ক (এন-৭) ৬ লেনে উন্নীত করণ প্রকল্প (ডাব্লুপি-১)কনট্রাক্ট প্যাকেজ লট-২ এর কাজ হবে কালীগঞ্জ বাজার থেকে বারোবাজার মান্দারতলা অংশ পর্যন্ত। ৬ লেন সড়ক নির্মাণের এই অংশের কাজ করছে আব্দুল মোনায়েম লিমিটেড নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে কালীগঞ্জ বাস টার্মিনাল এলাকায় ৭০ মিটার উড়ন্ত সেতু নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। আর এ উড়ন্ত সেতুর জন্য ৩৬ টি পাইল বা ফাউন্ডেশন নির্মাণ করা হবে। সেজন্য টার্মিনালের নির্দিষ্ট স্থানে বসানো হয়েছে ভারী সব যন্ত্রপাতি এবং রাখা হয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। মহাসড়কের কোল ঘেঁষে পাইলিং এ ব্যবহারের জন্য  বড় বড় রড ঝালাই এর কাজ করা হচ্ছে। কাজ চলমান থাকা অবস্থায় মহাসড়ক ব্যবহার করা আন্তঃনগর ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ শহরের মধ্যে চলাচলকারী ছোট বড় সব ধরনের যানবাহন অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে সড়কটিতে দিন রাত চলাচল করছে। জনবহুল এলাকায় ভারী নির্মান কাজের জন্য যে ধরনের  নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া প্রয়োজন সে  ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ উদাসীন।  কালীগঞ্জ পৌর ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল হক বিপ্লব আক্ষেপের সাথে এই প্রতিবেদককে জানান, টার্মিনালে উড়ন্ত সেতু নির্মাণের যে কর্মযজ্ঞ চলমান রয়েছে সেখানে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই করা হচ্ছে কাজ। প্লাস্টিক এবং বাঁশের যে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়। কাজের চারপাশ দিয়ে অন্তত ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু করে টিনের বেষ্টনী দিলে ভালো হয়। কাজ চলমান থাকা অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে আমাদের মহাসড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অতিসত্বর এ ব্যাপারে নজর দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের নিরাপত্তা কর্মকর্তা হযরত আলীর সাথে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা যথাযথ নিয়ম মেনে নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে কাজ করছি। তবুও যেহেতু নিরাপত্তার ব্যাপার নিয়ে কথা উঠছে সেহেতু আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে অবহিত করব। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী আব্দুস সালাম বলেন,কাজের অংশে বেষ্টনী দেওয়া আছে। আর সেটি যথেষ্ট বলে আমরা মনে করি। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা মেনে কাজ করা হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ পৌর প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এবং জনবহুল বাস টার্মিনাল এলাকায় নির্মাণ কাজ চলমান রাখতে অবশ্যই যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমি সরেজমিনে  ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে কথা বলব। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল এর সাথে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এ ব্যাপারটি দেখে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি এখনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিচ্ছি।

No comments

Powered by Blogger.