কোটচাঁদপুর পৌর বাসি নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত
রোকনুজ্জামান কোটচাঁদপুর থেকে-
পৌর এলাকার অধিকাংশ জায়গায় যেন খানা-খন্দের রাজত্ব। বর্ষা কালে বৃষ্টির সময় রাস্তাগুলো রূপ নেয় জল কাদায় ভরা ফাঁদে। সন্ধ্যা হলেই নেমে আসে ঘোর কৃষ্ট অন্ধকার পৌর এলাকার অধিকাংশ সড়কে জ্বলে না সড়ক বাতি। পৌরসভার সামনেই সড়কে প্রায় সময় লেগে থাকে যানজট যা প্রশাসনের উদাসীনতার জ্বলন্ত প্রমাণ। পৌর কর নিয়মিত পরিশোধ করেও নাগরিকরা পাচ্ছেন না ন্যায্য সেবা। রাস্তা-ঘাট ভাঙা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা অপ্রতুল বা নেই বললেই চলে, বিগত সময় যেটুকু ছিল সেটুকু ভেঙে যাওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশন হয় না।উন্নয়ন কার্যক্রমে বাস্তবতা ও প্রয়োজনের প্রতিফলন নেই বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের। সচেতন মহল বলছে, সেবার নামে প্রহসন না করে, প্রয়োজন বাস্তব ভিত্তিক সর্বজনীন উন্নয়ন। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার দৈনন্দিন চিত্র এমনই।পৌরসভা যেন বর্তমানে নাগরিক ভোগান্তির প্রদর্শনী। নির্বাচিত মেয়র কাউন্সিলরদের দায়িত্ব না থাকার কারণে ভোগান্তি বেড়েছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ বলছে সাধারণ মানুষ। সরকারি যে সমস্ত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পৌরসভার তাদের কাজি সের উঠতে পারে না সাধারণ নাগরিকের সেবা দেবে কিভাবে। স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর ধরে কোনো সড়ক সংস্কার হয়নি। বিদ্যুৎ থাকলেও অনেক স্থানেই নেই সড়কবাতি। রাত নামলেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ডুবে যায় অন্ধকারে। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা,পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা-সবকিছুতেই চরম অব্যবস্থা। কোটচাঁদপুর প্রথম শ্রেণীর পৌরসভ। অথচ নাগরিক সেবায় প্রথম শ্রেণীর ছাপ নেই। নাগরিকরা বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদের সেবাও যেন এর চেয়ে অনেক ভালো! নাগরিক অধিকার আর কর দেয়ার দায় একপাশে থাকলেও পৌর প্রশাসনের দায়হীনতা যেন সীমা ছাড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই পৌরসভা কি কেবল নামেই পৌরসভা, না কি কর আদায়ের যন্ত্র? ১ লাখ ২০ মানুষ পৌরসভায় বসবাস করলেও অধিকাংশই প্রতিনিয়ত ভোগেন নানা সমস্যায়। পৌর এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সড়কজুড়ে খানাখন্দ। বর্ষা মৌসুমে চলাচল হয়ে পড়ে কঠিন। জনসেবা নয়, প্রশাসনের উদাসীনতাই যেন বেশি চোখে পড়ে। সচেতন মহল বলছে,চোখে ধুলা দিয়ে নয়, বরং টেকসই পরিকল্পনায় ও বাস্তব ভিত্তিক উন্নয়নের মধ্য দিয়েই
দিতে হবে নাগরিক সেবার জবাব। শুধু কর আদায় নয়, প্রকৃত সেবা নিশ্চিত করেই স্থানীয় সরকারের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।পৌর এলকার মানবাধিকার ও গণমাধ্যম কর্মী রেজাউল করিম বলেন, প্রতিদিন রাস্তায় চলতে গিয়ে পায়ে কাদা লাগে, কেউ কেউ পড়ে গিয়ে আহতও হয়। কর দেই, কিন্তু সেবা কোথায়? সন্ধ্যার পর বাইরে বের হওয়া দায়। চারপাশে অন্ধকার,রাস্তার অবস্থাও করুণ। পৌরসভার লোকজন শুধু কর তুলতে জানে, কিন্তু কাজের সময় তাদের পাওয়া যায় না। একটু বৃষ্টি হলেই উপজেলা পরিষদের সামনে, সরকারি কেএমএস কলেজ রোডে, খোন্দকার পাড়া, পোস্ট অফিস মোড়, হাসপাতাল সড়ক, বলুহর স্যান্ড, সোলেমানপুর সহ পৌর এলাকার অধিকাংশ জায়গা পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় পানি জমাট বেঁধে থাকে। শহরের পানি নিষ্কাশনের খাল গুলো প্রভাবশালীরা দখল করে মার্কেট তৈরি করে বরাদ্দ দিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এমনটা হচ্ছে। সঠিক তদারকি থাকলে এমনটা হতো না। ঈশী খোন্দকার বলেন, সরকারি কলেজ ও খোন্দকার পাড়ার গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক অথচ এক সপ্তা যাবৎ বিদ্যুতের খুঁটিতে সড়ক বাতি জলে না। বর্তমানে দায়িত্ব থাকা কাউন্সিলর ও পৌর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তাহলে সেবার মানে পাচ্ছিটা কি-? নাগরিক সমাজের আল-মামুন বলেন, নামমাত্র উন্নয়নের অভিনয় দিয়ে জনগণকে বেশি দিন বোকা বানানো যাবে না। সময় এসেছে টেকসই পরিকল্পনায় এগিয়ে যাওয়ার।
এ বিষয় কোটচাঁদপুর পৌরসভার সরকারি প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, সড়কের বাতি অলরেডি কিছু লাগিয়েছি। নতুন করে আবার টেন্ডার হয়েছে যেগুলো নেই সেগুলো লাগানো হবে। আমি তো নতুন জয়েন করেছি পুরো শহর এখনো দেখে পারিনি। পুরাতন ড্রেনগুলো যদি সংস্কার করলে হয় তাহলে দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেব। নতুন ড্রেন করতে হলে তো সময়ের ব্যাপার। আমাদের উন্নয়ন বরাদ্দ আসে এডিবির থেকে তাও সীমিত। নাগরিক সেবা অব্যাহত রাখতে আমাদের কাজ চলমান। এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক কাজী আনিসুল ইসলামের কাছে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও কল রিসিভ না করাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

No comments