ঝিনাইদহ -৩ আসনে অধ্যপক মতিয়ার রহমানই অগ্রগণ্য

রাশেদ সরোয়ার ঝিনাইদহ (মহেশপুর) প্রতিনিধিঃ
বেঁজে উঠেছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাডোল। প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও জোট প্রতিটি আসনে তাদের প্রার্থী মনোনয়ন দিতে ব্যস্ত। একটি আসনের বিপরীতে দাড়ানো প্রার্থীদের সারি থেকে যোগ্য প্রার্থী বেছে নিতে নির্বাচক মন্ডলী হয়ে যাচ্ছেন গলদঘর্ম। এ সারিতে আছেন যোগ্য প্রার্থী যেমন, তেমন আছেন এমন প্রার্থী যারা এখন লাইনে দাড়িয়ে ভবিষ্যতের বীজ বপন করতে চান। তাই প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে। এ ধারার কোন ব্যতিক্রম নয় ঝিনাইদহের ৩ তথা মহেশপুর কোটচাঁদপুরের আসনটিও। আওয়ামীলিগ বা মহাজোটে তেমন কোন সমস্যা নেই। প্রায় এক যুগ ক্ষমতায় থাকা দলটি নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দী কারন তাদের কোন সাহায্যকারী এ আসনে নেই। ভিন্ন অবস্থা ২০ দলীয় জোটের কারন আওমীলিগ আসার আগে দু বার ছিলো বিএনপির এমপি তারও আগের দু টার্ম ছিলো জামায়াত। অবশ্য বিএনপি শেষবার জামায়াতের সহায়তায় এসেছিলো। আর আওমীলিগের শেষ টার্মে কেও অংশ গ্রহণ না করলেও প্রথম টার্মে তথা ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি জামায়াত উভয়ই অংশ গ্রহণ করে এবং সে নির্বাচনে জামায়াত দ্বিতীয় স্থান লাভ করে যেখানে বিএনপির পক্ষে মরহুম মাস্টার শহিদুল ইসলাম পান ৫৯০১৫ ভোট এবং জামায়াতের পক্ষে অধ্যপক মতিয়ার রহমান পান ৮১৭৩৯ ভোট। লক্ষণীয় অধ্যপক মতিয়ার রহমান এ আসনের অবিসংবাদিত নেতা মরহুম শহিদুল ইসলাম মাস্টারের সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন অথচ তার সমকক্ষ নেতা বিএনপির পক্ষে এ আসনে আর নেই। আরো যে সকল কারনে সর্বোস্তরের জনগন তাকে অগ্রগামী মনে করে তার মধ্যে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী ২০১১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এ আসনের ১৭ টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে নিএনপি পায় ৪ টি আওমীলিগ পায় ৪ টি আর জামায়াত একক ভাবে ৯ টি ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পায়। মহেশপুর পৌরসভাতে ৯টি কাউন্সিলরের মধ্যে ৫টি তে জামায়াত মনোনিত প্রার্থী নির্বাচিত হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীতে বিতর্কীত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জামাত অংশগ্রহণ করেনি। তবে তৎ পরবর্তী উপজেলা নির্বাচনে উভয় দলই অংশগ্রহণ করে এবং এতে জাময়াত অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে। কোটচাদপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান সহ দুটি ভাইস চেয়ারম্যান তথা তিনটি পদের সবকটিতেই জামায়াত জয়লাভ করে। পাশাপাশি মহেশপুর উপজেলাতেও উপজেলা চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াতে ইসলামী জয় লাভ করে। বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত নিজের মনোনিত প্রার্থী অধ্যপক ফারুক আহমেদ কে তুলে নিয়ে জোট বদ্ধ নির্বাচনের কিনচিৎ নজরানা স্বরূপ বিএনপি মনোনিত প্রার্থী এ্যাড আব্দুল আহাদকে পূর্ণ সমর্থোন করে। বর্তমানে এ আসনের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে যে বিগত ইউপি নির্বাচনে চরম দখলবাজির মুখেও জামায়াত ১০ নং নাটিমা ইউনিয়ন এবং ১২ নং আযমপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে অনন্য নজির স্থাপন করে। এ আসনের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে সর্বোমোট ২৪ জন মেম্বর এবং দুজন কাউন্সিলর জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। দেশের চলমান প্রেক্ষাপটে নাগরিক, মানবিক, ধর্মীয় ও সুষ্টু ভোটের গনতান্ত্রীক অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন সংগ্রামে এ আসনের জামায়াতে ইসলামিকে ১৭৩ টি মামলার জাতাকলে পিষ্ট হতে হচ্ছে, যার আসামী সংখ্যা প্রায় ১৪০০০, কারাবন্দী হয়েছে ৩০০০ এর ও অধিক। বিগত আন্দোলনে অতি নিকটবর্তী সময়ে ঝিনাইদহ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের ১৬ জন শহীদ হয়েছে তার মধ্যে ঝিনাইদহ-৩ তথা মহেশপুর কোর্টচাদপুর আসনেই ৩ জন শহীদের রক্ত ঝরেছে। ১৯৮৭ সাল থেকে সুরু করে আজ পর্যন্ত দলীয় বা জোটবদ্ধ আন্দোলনে জামায়াত মনোনিত প্রাার্থী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নিজের মনোনয়ন তুলে নিয়ে ৪ দোলীয় জোটের প্রার্থী মোরহুম আলহাজ্ব শহীদুল ইসলাম মাষ্টারকে বিজয়ী কারানোর জন্য তার দলকে সাথে নিয়ে শতভাগ সক্রিয় ময়দানী ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে তিনি ১৫টি মামলার আসামী। তিনি ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ মে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৮ মাস কারা ভোগ করেন। ক্ষমতাসীনদের চাপে পড়ে চাকুরী ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন মযলুম এ মানুষটি। অদ্যবধি জান-মালের ঝুকির মধ্যে থাকা এ মানুষটি বিগত ৩০ বছর যাবত সুখে দুখে জনগণের মাঝে রয়েছেন। শত অত্যাচারেও তিনি মাঠ ছাড়েননি। অথচ আজ যারা ২০ দোলীয় জোটের নমীনেশন পাওয়ার জন্য বশন্তের ককিলের ন্যয় ভিড় জমিয়েছেন বিগত দিনের আন্দোলনের মাঠে ময়দানে তাদের অনেকেরই মাথার টিকিও খুজে পাওয়া যায়নি। এহেন অবস্থার প্রেক্ষাপটে উপসংহারে বলতে চায় যে, জুলুম অত্যাচার নিপিড়ণের নির্মম নিষ্ঠুর কষাঘাতের হাত থেকে মজলুম এ জনপদকে হেপাজত করে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও দলমত নির্বিশেষে শান্তি ও সহোমোর্মীতা পূর্ণ জীবন যাপন ও আদর্শ মহেশপুর কোটচাদপুর গড়ার কাজে আপামোর জন সাধারণের প্রতিনিধি হিসেবে তথা ২০ দোলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে জামায়াত মনোনিত প্রার্থী অধ্যপক মতিয়ার রহমানকে মনোনয়োন দেওয়া সময়ের অপরিহার্য্য দাবী বলে মহেশপুর কোর্টচাদপুরের মুক্তি কামী বৃহত্তর জনগোষ্ঠী মনে করে।

No comments

Powered by Blogger.