আথির্ক সংকটে ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকল


 স্টাফ রিপোর্টার:
টাকার অভাবে কৃষকদের পাওনা পরিশোধ করতে পারছে না দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ চিনিকল। চলতি মৌসুমে মিলটির কাছে কৃষকের পাওনা রয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। 
জানা যায়, কারখানা সচল রাখতে প্রতিদিন প্রায় ৫০ লাখ টাকার আখ প্রয়োজন হয়। ছয় সাবজোনের ৩৮ ক্রয় কেন্দ্র এবং মিলগেট থেকে এসব আখ কেনা হয়। গত ৭ ডিসেম্বর চলতি মাড়াই মৌসুম শুরু হওয়ার পর প্রথম কিস্তিতে কৃষকদের তিন কোটি টাকা পরিশোধ করা হলেও এখনো বাকি রয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। গত এক মাস ১০ দিনে বাকি পাওনা পরিশোধ না করায় আখচাষিদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। চাষিরা প্রায়ই পাওনা টাকার জন্য বিক্ষোভ প্রদশর্ন করছে। আর নাজুক এ অবস্থার জন্য মিলে উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়াকে প্রধান কারন বলছেন মিলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউছুপ আলী শিকদার। 
গত মৌসুমে উৎপাদিত প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন চিনি গুদামে পড়ে আছে। আর চলতি মৌসুমে উৎপাদিত চিনি যোগ হয়েছে আরো চার হাজার মেট্রিক টন। ২ ফেব্রæয়ারি রাত ১২ টা পযর্ন্ত ৩ হাজার ৯০৫ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। মিলগেটে চিনির প্রতি কেজি মূল্য ৫০ টাকা। ফলে অবিক্রীত এসব চিনির মূল্য প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। অন্যদিকে চিটা গুড় আছে দুই হাজার মেট্রিক টন। যার মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা।
মিলের শ্রমিকরা জানায়, প্রতি কেজি চিনি মিলগেটে বিক্রি হয় ৫০ টাকা। মিলগেটের বাইরে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা কেজি। যে কারনে মিলের তালিকাভুক্ত ডিলাররা এ মিলের চিনি কিনতে অপারগতা প্রকাশ করে আসছে। আর চিনি বিক্রি না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে মিলটি।
উপজেলার বুজিডাঙ্গা মুন্দিয়া গ্রামের আখচাষী মোহন জানান, এ বছর সে ৬ বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছে। ইতিমধ্যে চার বিঘা জমির ২৫ গাড়ি আখ মিলে সরবরাহ করেছে। যার পাওনা প্রায় দেড় লাখ টাকা। কিন্তু ডিসেম্বরের ২৩ তারিখ পযর্ন্ত দুটি ভাউচারের ১০ হাজার টাকা পেয়েছে।
সবের্শষ ২০১৭-১৮ মাড়াই মৌসুমে ৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে মিলটির। এর আগে ২০১৬-২০১৭ লোকসান হয় ২৬ কোটি ৯ লাখ টাকা। এ পযর্ন্ত ৩৫ মাড়াই মৌসুমে লোকশান হয়েছে ৩শ ১ কোটি টাকা। বাকি ১৬ মৌসুমে লাভ হয়েছে ৩৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউছুপ আলী শিকদার জানান, মিল গোডাউনে প্রায় ৩০ কোটি টাকার বেশি চিনি অবিক্রিত পড়ে রয়েছে। চিনি বিক্রি না হওয়ায় চাষীদের আখ বিক্রির পাওনা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। চলতি মৌসুমে চিনিকলটি সচল রাখতে ৩৪ কোটি টাকা ভতুির্ক চাওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কপোের্রশনের কাছে। কিন্তু দুই মাস হতে চললেও এখনো কোন টাকা পাওয়া যায়নি। তবে টাকার ব্যবস্থা হলেই আগে কৃষকদের টাকা পরিশোধ করা হবে বলে যোগ করেন মিলটির এই শীষর্ কম


No comments

Powered by Blogger.