করোনায় দুর্গতদের জন্য শেষ সম্বলটুকু দান করলেন হতদরিদ্র রাজকুমার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
পেশায় একজন গ্রামবাংলা (অটো চালক) নাম তার রাজকুমার বিশ্বাস। বয়স (৫০) । ঝিনাইদহ শহরের নবগঙ্গা নদীর পাড়ে সরকারি জমিতে বসবাস করতেন তিনি। মাস দেড়েক আগে নদী দখলমুক্ত করন অভিযানে জেলা প্রশাসক তার ঘর ভেঙ্গে দেন। তারপর থেকে শহরের চাকলাপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্ত্রী ও এক কণ্যা সন্তান নিয়ে বসবাস করেন তিনি। নিজের জমা-জমি না থাকায় সরকারি জমিতে থাকতেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতে বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে দেওয়ার পর আশা করেছিলেন গত কয়েকবছর ধরে সঞ্চয় 
করা টাকা দিয়ে শহরে এক টুকরা জমি কিনে বাড়ি করবেন। ঠিক সেই মূর্হুতে বিশ্বে যখন মহামরি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশেও ঠিক একই অবস্থার সুষ্টি হয়। তখন গ্রামবাংলা (অটো চালক) রাজ কুমারের মানসিক অবস্থা পাল্টে যায়। নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করে ভাবতে শুরু করেন দেশের মানুষের কথা। সোমবার বিকেলে ভাড়ায় চালিত অটো গ্রাম বাংলার মালিক খুরশিদ আলমের কাছে জমা রাখা টাকা নিয়ে হাজির হন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। সেখানে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ’র হাতে তিলে তিলে জমানো টাকা ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মহামারী করোনা ভাইরাসে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় মানুষের সহযোগিতার জন্য নিজের শেষ সম্বলটুকু দান করেন।
রাজকুমার বিশ্বাস বলেন, টাকা দিয়ে কি হবে? দেশের যে অবস্থা। কখন মারা যায় ঠিক নেই। টাকা দিয়ে কি হবে। যদি বেচে না থাকি জমানো টাকা দিয়ে কি হবে। টাকা দিয়ে মানুষকে সহযোগিতা করতে পারলেই এটা বড় পাওয়া।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, মহামারী করোনার সময় রাজ কুমারের মতো একজন সামান্য অটো চালক যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা সমাজের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে। এছাড়াও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তাকে বিশেষ সম্মাননা জানানোর জন্য।

No comments

Powered by Blogger.