ঝিনাইদহে একদিনে ৫৩ শতাংশ শনাক্ত, আসছে কঠোর বিধিনিষেধ

এম এ কবীর, ঝিনাইদহ -

ঝিনাইদহে হঠাৎ করেই করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই নমুনা পরিক্ষার তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ শনাক্ত হচ্ছে। তবে অবাধে চলাচলকারীদের মধ্যে নেই কোন সচেতনতা। মাস্ক ব্যবহারে অনীহা দেখা গেছে প্রায় প্রত্যেকের।

স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া হিসাবে ঝিনাইদহে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ৬০টি নমুনা পরিক্ষায় ৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে আক্রান্তের হার ৫৩ দশমিক ১২ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৩ হাজার ১৫৪ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৮২০ জন এবং মারা গেছেন ৬০ জন।

করোনার এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বুধবার (১৬ জুন) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। এ সভা থেকে আসতে পারে কঠোর বিধিনিষেধের মত সিদ্ধান্ত।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) সকাল থেকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক মজিবর রহমানের উপস্থিতিতে শহরের পায়রা চত্বর, পোস্ট অফিস মোড়, মুজিব চত্বর, আরাপপুর, বাইপাস সড়কসহ অন্তত ১০টি পয়েন্টে চলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। এতে মাস্ক ব্যবহার না করা,স্বাস্থ্যবিধি না মানা, গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী বহনসহ বিভিন্ন অভিযোগে অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে মামলা করে ৫০ টাকা থেকে ৫‘শ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়।

এ সময় বিনামূল্যে মাস্কও বিতরণ করা হয়। শহরে মস্ক না পরে আসা অনেককে আবার মুখ ঢেকে পালানোর চেষ্টাও করতে দেখা যায়।

যাত্রীবাহী বাস থেকে অতিরিক্ত যাত্রী নামিয়ে বিকল্প যানে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তবে মাস্ক ব্যবহারে সচেতন করতে গেলে অনেকেই প্রশাসনের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

প্রশাসনের এ অভিযানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সালমা সেলিম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুজ্জামান সরকার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিন্নাতুল ইসলাম সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছাড়াও পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্কাউট সদস্যরা অংশ নেন।

মাস্ক না পরে জরিমানা দেয়া হাসমত আলী বলেন, ‘মাস্ক পরতে পরতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। তাই আজ মাস্ক ছাড়াই শহরে এসে অভিযানের মুখে পড়ে জরিমানা গুণতে হলো। তবে শহরে আমি আর মাস্ক বাদে আসব না।’

জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, ‘ঝিনাইদহ সহ আশপাশের জেলায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়াই প্রশাসনের জরুরি অভিযান শুরু হয়েছে। জেলার ১০টি পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলছে। আমরা জরিমানার পাশাপাশি মাস্ক বিতরণসহ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি পালনে সচেতন করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ বুধবার করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। সেখান থেকে বিধিনিষেধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’

No comments

Powered by Blogger.