কালীগঞ্জে কৃমি নাশক ঔষধ খেয়ে মারা গেল এক কৃষকের ১১ টি ভেড়া

 

এনামুল হক সিদ্দিক, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) থেকে-

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এক কৃষকের ১১ টি ভেড়া কৃমি নাশক ঔষধ খেয়ে মারা গেছে। আরো বেশ কয়েকটি অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছে। মারা যাওয়া ভেড়াগুলোর আনুমানিক মুল্য ২ লাখ টাকা। বুধবার এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কমলাপুর গ্রামে।  

ভেড়ার মালিক আফজাল হোসেন জানান, তিনি হতদরিদ্র মানুষ। নিজের মাঠে কোনো জমি নেই। ৩ শতক জমির উপর টিন সেডের এক কক্ষের ঘরে বসবাস করেন। ৫ বছর হলো তিনি এই ভেড়াগুলো বড় করে তুলছেন। একে একে ৩০ টি ভেড়া হয়েছে তার। যার আনুমানিক মুল্য ৬ লাখ টাকা। এগুলোর মধ্যে একটির মুল্য ৩৫ হাজার পর্যন্ত রয়েছে, আবার ছোটগুলো ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। গত ৫ বছরে প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন ভেড়াগুলোকে বড় করে তুলতে। আশা ছিল আর ৬ লক্ষাধিক টাকা বিক্রি করবেন। 

আফজাল হোসেন জানান, প্রায়ই তিনি খেয়াল করেন ভেড়াগুলোর স্বাভাবিক পায়খানা হচ্ছে না। এটা দেখে তিনি বুঝতে পারেন এগুলোর শরীরে কৃমি দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরে যান। সেখানকার চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করলে তারা কৃমির জন্য ১০০ গ্রাম ওজনের একটি এভিনেক্স পাউডারের প্যাকেট দেন। দেবার সময় জানিয়ে দেন গর্ভবতী ভেড়াগুলোর না খাওয়াতে। এই এক প্যাকেট ঔষধ বাকি ভেড়াগুলোকে খাওয়াতে বলেন। বুধবার সকাল ৬ টার সময় তিনি ওই ঔধষের অর্ধেকটা পানিতে মিশিয়ে ১৮ টি ভেড়ার খাইয়ে দেন। ঔষধ খাওয়ানোর পরপরই ছটফট করতে থাকে। আধাঘন্টার মধ্যেই ভেড়া মারা যেতে শুরু করে। একে একে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত ১১ টি মারা যায়। ঔষধ খাওয়ানো বাকি ৭ টি ছিল কাতর অবস্থায় শুয়ে আছে। আশংকা করছেণ এগুলোও মারা যাবে। এই ভেড়াগুলোই ছিল তার সম্বল। এগুলো মারা গেলে কিভাবে বেঁচে থাকবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না। তিনি আরো জানান, তারা স্বামী-স্ত্রীর কোনো সন্তান নেই। এগুলোই ছিল তাদের প্রাণ। 

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ আতিকুজ্জামান জানান, ভেড়ার মালিক মঙ্গলবার তাদের অফিসে এসেছিলেন। সবকিছু শুনে তার কৃমির জন্য ঔষধ দেওয়া হয়। সেগুলো তিনি যথানিয়মে খাওয়ালে এভাবে মারা যাবার কথা নয়। তারপরও কেন মারা গেল তা নিশ্চিত হতে তারা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এই নমুনা পরীক্ষার পর বোঝা যাবে মৃত্যুর কারণ।


No comments

Powered by Blogger.