ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন পরীক্ষার নির্দেশনা: বিভাগ চাইলে যেকোন সময়

তরিকুল ইসলাম,  ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি- 

করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে স্ব স্ব বিভাগ কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পরীক্ষাসমূহ অনলাইনে পরীক্ষা নিতে বিভাগগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পরীক্ষাসমূহ অনলাইনে গ্রহণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন এবং টেবুলেশন শীটে নম্বর সন্নিবেশ সংক্রান্ত একটি সমন্বিত নির্দেশিকা সংযুক্ত নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) বিভিন্ন অনুষদের ডীনদের নিয়ে আলোচনায় গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে সংযুক্ত নির্দেশিকা নির্দিষ্ট অনুষদভূক্ত বিভাগসমূহের সভাপতিকে অবহিত করবেন। পরীক্ষা নির্দেশিকা বিভাগীয় সভাপতি সকল শিক্ষককে অবহিত করেবেন। তারপর বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি বসে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের আলোকে পরীক্ষা নেয়া শুরু করতে করবেন।

অনলাইন পরীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে -

১. পরীক্ষা পূর্ববর্তী কার্যক্রম সংক্রান্ত

* পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন ফরম পূরণ:

সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য বর্তমানে প্রচলিত ফরমের ন্যায় একটি পিডিএফ ফরম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে আপলোড করা হবে। যেটি পরীক্ষার্থী প্রিন্ট করে যথাযথভাবে স্বহস্তে পূরণপূর্বক স্ক্যান করে একটি পিডিএফ ফাইলে রূপান্তর করে তার বিভাগীয় সভাপতির নিকট এড়ড়মষব ঈষধংংৎড়ড়স এ জমাকরণ অথবা ই-মেইলে প্রেরণের মাধ্যমে আবেদন করবে।

* পরীক্ষার ফি সংক্রান্ত:

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরীক্ষার্থী তার বিভাগ এবং আবাসিক হলের পাওনাসহ অংশগ্রহণকৃত পরীক্ষার সমুদয় ফি পরিশােধ করবেন। অন্যথায়, কর্তৃপক্ষ তার ফলাফল স্থগিত রাখবেন। অনলাইনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ব্যবহৃত আবেদন ফরমের সাথে শিক্ষার্থীরা এই ব্যবস্থার প্রতি সম্মতি প্রকাশ করে একান্ত অঙ্গীকারনামা প্রদান করবেন। অথবা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন ফরম পূরণের সময়ই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন ফি সংগ্রহ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

* পরীক্ষার্থীদের অনলাইন পরীক্ষা ও সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ:

উপরে আবেদন আবেদন ফরমে শিক্ষার্থীর নাম, বিভাগের নাম, শ্রেণি, সেশন, বর্ষ, সিমেস্টার, ল্লোল নম্বরের পাশাপাশি মোবাইল ফোন নম্বর এবং ই-মেইল আইডি লেখার ঘর থাকবে। শিক্ষার্থী কর্তৃক পূরণকৃত ফরমটি এড়ড়মষব ঈষধংংৎড়ড়স অথবা ই-মেইলে পাওয়ার পর বিভাগীয় সভাপতি সেটি প্রিন্ট করবেন এবং সংশ্লিষ্ট ভুক্তিগুলি ব্যবহার করে বর্ষ, সিমিস্টার ভিত্তিক পরীক্ষার্থীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করবেন। এই তালিকার একটি কপি সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কমিটির সভাপতির নিকট এবং একটি কপি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর প্রেরণ করবেন।

২. অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার সংক্রান্তঃ

* পরীক্ষা নেওয়ার জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম প্রস্তুতকরণ:

অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার জন্য গুগল ক্লাসরুম ব্যবহার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ নিজ সেমিস্টার/বর্ষের জন্য তৈরি করা গুগল ক্লাসরুম এ পরীক্ষা শুরুর অন্তত ১৫ মিনিট আগে যুক্ত হতে হবে। শিক্ষার্থীরা কারিগরি সমস্যার প্রয়োজনে তিন পরিদর্শক ও পরীক্ষকের মেবাইল নাম্বার সংগ্রহে রাখবেন। সব পরীক্ষার্থী নির্ধারিত ক্লাসরুমে যুক্ত হতে পেরেছে কি না বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সেমিস্টার/বর্ষের পরীক্ষার পরিদর্শকরা নিশ্চিত করবে।

* প্রশ্নপত্র সংক্রান্ত:

নির্ধারিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রধান পরিদর্শক বিভাগীয় সভাপতির কাছ থেকে সংগ্রহ করবেন। যা পরীক্ষা শুরুর পাঁচ মিনিট আগে গুগল ক্লাসরুমে প্রকাশ করে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র সরবরাহের ব্যবস্থা করবেন। সময় গণনার জন্য গুগল ঘড়ি রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করবেন।

* উত্তরপত্র প্রস্তুতকরণ ও জমাদান সংক্রান্ত:

অনলাইনে পরীক্ষার্থীগণ অ৪ সাইজের সাদা কাল কাগজ ব্যবহার করবেন। প্রতি পৃষ্ঠার ডান কোণায় পরীক্ষার্থী নিজের রোল নম্বর ও পৃষ্ঠা নম্বর লিখবেন। উত্তরপত্রের কাভার পেজ পরীক্ষা শুরুর সাত দিন আগে বিভাগ যে কোন মাধ্যম দিয়ে শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দিবে।

স্বহস্তে কালো কালির কলম ব্যবহার করে প্রশ্নের ক্রমানুযায়ী উত্তর লিখবে। লেখা শেষ করে ঈধসংপধহহবৎ অথবা অনুরূপ অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে যথাযথভাবে পূরণকৃত কভার পেজটি প্রথমে এবং উত্তর লেখা পৃষ্ঠাগুলাের ক্রম ঠিক রেখে সমগ্র উত্তরপত্রের একটি (ংরহমষব) পিডিএফ ফাইল তৈরি করবে। অতঃপর ফাইলটি তার রোল নম্বরে রিনেইম করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক নির্দেশিত উপায়ে (এড়ড়মষব ঈষধংংৎড়স/ঊ-সধরষ ইত্যাদি) তাঁর কাছে জমা দেবে।

৩. তত্ত্বীয় কোর্সের পরীক্ষা সংক্রান্ত:

* প্রচলিত অর্ডিন্যান্সের আলােকে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রতিটি তত্ত্বীয় কোর্সের জন্য ১ম এবং ২য় পরীক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। প্রতিটি তত্ত্বীয় কোর্সের ঈষধংং অঃঃবহফধহপব, ছঁরু/চৎবংবহঃধঃরড়হ, ওহ-পড়ঁৎংব/ঃঁঃড়ৎরধষ বীধস/ধংংরমহসবহঃ সমন্বয়ে নির্ধারিত অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন (ওহঃবৎহধষ ঊাধষঁধঃরড়হ) কোর্স শিক্ষক তাঁর সুবিধামত অনলাইন/অফলাইন মাধ্যমে সম্পন্ন করবেন।

* লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত মােট নম্বরের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ নম্বরের ঞধশব-যড়সব বীধস/ড়ঢ়বহ- নড়ড়শ বীধস/ঁহংববহ বীধস/ৎবঢ়ড়ৎঃ/পৎবধঃরাব ধংংরমহসবহঃ ইত্যাদি উপায়ে বর্ণনামূলক, বহুনির্বাচনী, সংক্ষিপ্ত ইত্যাদি ধরনের প্রশ্নে জুম প্লাটফরমে রিয়েল-টাইম মনিটরিংয়ে (অনলাইন) অথবা এড়ড়মষব ঈষধংংৎড়ড়স/ঊ-সধরষ/ডযধঃংধঢ়ঢ় ইত্যাদি মাধ্যমে প্রশ্নপত্র প্রদান করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে উত্তরপত্র গ্রহণ (অফলাইন) করা সম্ভব এমন প্রশ্নে লিখিত পরীক্ষা হবে।

* সংশ্লিষ্ট কোর্সের বিষয়বস্তুর উপরে বাকি ৬০ থেকে ৫০ শতাংশ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।

* বিভাগ থেকে সব পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা শুরুর অন্তত এক সপ্তাহ আগে প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।

৪. বর্ষ/সেমিস্টারের মৌখিক পরীক্ষা:

বহিরাগত সদস্যের উপস্থিতিতে পরীক্ষা কমিটি জুম/গুগল মিট ইত্যাদি অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করবেন।

৫. ব্যবহারিক পরীক্ষা সংক্রান্ত:

ভৌত অবকাঠামাের সুবিধা এবং পরীক্ষার্থীর শারীরিক উপস্থিতি ছাড়াই অনলাইন/অফলাইন পদ্ধতিতে ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হলে বিভাগীয় একাডেমিক কর্তৃক নির্ধারিত পন্থায় সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কমিটি পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করবেন । অন্যথায়, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত ব্যবহারিক পরীক্ষা সমূহ স্থগিত থাকবে।

৬. প্রজেক্ট এবং থিসিস কোর্সের পরীক্ষা:

পরীক্ষা কমিটি জুম/গুগল মিট ইত্যাদি অনলাইন প্লাটফরম ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীদের প্রজেক্ট/থিসিস ওয়ার্কের প্রেজেন্টেশন এবং বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে প্রজেক্ট/থিসিস কোর্সের মূল্যায়ন করবেন।

৭. পরীক্ষা পরবর্তী কার্যক্রম - 

* উত্তরপত্র পরীক্ষকের কাছে বিতরণ সংক্রান্ত:

প্রধান পরিদর্শক এড়ড়মষব ঈষধংংৎড়ড়স/ঊ-সরধষ/ডযধঃংধঢ়ঢ় ইত্যাদি মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের জমাকৃত উত্তরপত্রগুলি প্রিন্ট করে প্রতিটি উত্তরপত্রের কাভার পেজে পরিদর্শকের জন্য নির্ধারিত স্থানে স্বাক্ষর করবেন এবং পরীক্ষণের জন্য ১ম এবং ২য় পরীক্ষের কাছে হার্ড/সফট কপি প্রেরণ করবেন। প্রত্যেক পরীক্ষক উত্তরপত্রগুলি মূল্যায়ন শেষে প্রচলিত পদ্ধতির ন্যায় পরীক্ষার্থীদের বিস্তারিত নম্বরপত্র এবং সমন্বিত নম্বরপত্র ই-মেইলে অথবা সীলগালাকৃত খামে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নিকট প্রেরণ করবেন।

৮. টেবুলেশন:

প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করে টেবুলেশন ও পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে। ব্যবহারিক কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে না পারলে কেবল অন্যন্য কোর্সে প্রাপ্ত নম্বরের উপরই গ্রেডিং পদ্ধতিতে ফলাফল গণনা করে শিক্ষার্থীকে বর্তমান বর্ষ / সেমিস্টারে উত্তীর্ণ ও অনুত্তীর্ণ ঘোষণা করা।


No comments

Powered by Blogger.