কালীগঞ্জ স্কুলের প্রবেশ পথের পাশে ময়লার ভাগাড়, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার-

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এম,ইউ কলেজিয়েট স্কুলের পাশে থাকা ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় থেকে প্রচন্ড দুর্গন্ধে স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়েছে খুদে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলতে থাকায় শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ স্থানীয়দের মাঝে বিরূপ প্রতক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

কালীগঞ্জ পৌসভার ২নং ওয়ার্ড কলেজ পাড়ার কলাহাটা মোড়ের জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর পেছনে এমইউ কলেজিয়েট স্কুলটি অবস্থিত। স্কুলে প্রবেশের দ্বিতীয় গেটের সামনে ফেলা হয় কালীগঞ্জ বাজারের কাচাঁমাল হাটা ও কলা হাটার ময়লার অংশ। এ কারণে ময়লার দুর্গন্ধ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিশু শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। গতকয়েক বছর যাবত সেখানে নিয়মিত ভাবে বাজারের ময়লা ফেলে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। এম, ইউ কলেজিয়েট স্কুলটি ২০০২ সালে স্থাপিত হয়। প্রথমে স্কুলটি সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজ হেস্টেলে ক্লাসরুম পরিচালনা করা হলেও বর্তমানে স্কুলটির নিজস্ব ২০শতক জমিতে ৭টি ক্লাস রুম ১টি অফিস রুম ও ১টি অভিভাবকদের বসার জন্য রুম রয়েছে। ১শ ৪৪জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে স্কুলটিতে। ১০জন শিক্ষক ও কর্মচারি রয়েছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার বৃহত্তম কৃষিপণ্যের দৈনিক পাইকারি ক্রয়Ñবিক্রয়ের বাজার ও ঐতিহ্যবাহী কলার হাট বশে সপ্তাহে দুই দিন শুক্র ও সোমবার। 

কালীগঞ্জ উপজেলার বৃহত্তম কৃষিপণ্যের দৈনিক পাইকারি হাটে প্রায় ১শ টি পাইকারি ও খুচরা বিক্রি ব্যবসা  প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার ক্রেতা-বিক্রেতা নিয়মিত ওই হাটে কৃষিপণ্য কেনাবেচা করতে আসেন।

কালীগঞ্জ পৌর সভার ময়লা ফেলার নিজস্ব ময়লার ভাগাড় থাকলেও ময়লা-আবর্জনা এনে ফেলা হয় এম,ইউ কলেজিয়েট স্কুলের পাশে ফাঁকা জায়গায়। সেখানে ফেলা হচ্ছে কলাহাটা ও কাঁচাবাজারসহ হাটের সব বর্জ্য। কয়েক বছর যাবৎ এখানে ময়লা ফেলা হলেও পরিষ্কারের বা বর্জ্য অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ময়লা-আবর্জনা সেখানেই পচে যায়। এর পর তীব্র দুর্গন্ধ ছড়ায়। এই নোংরা পরিবেশেই চলাফেরা করতে হয় এলাকাবাসী ও স্কুলের খুদে শিক্ষার্থীদের। অস্বাস্থ্যকর, নোংরা পরিবেশে তীব্র দূর্গন্ধের মধ্যে নিয়মিত ক্লাস করতে হচ্ছে খুদে শিশু শিক্ষার্থীদের। শ্রেণীকক্ষের দরজা-জানালা বন্ধ করেও দুর্গন্ধের থেকে রেহাই পাচ্ছেন না শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অভিভাবক দিপংকর সিকদার জানান, আমরা আমাদের বাচ্ছাদের নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যেতে পারিনা। কয়েকদিন আগে একজন অভিভাবককে ছুচতে কামড়েছিলো ওখানে সাপÑপোকামাকড়েরও ভয় আছে। আমাদের বাচ্ছারা ওই রাস্তা দিয়ে যেতে খুব ভয় পায়। 

বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় তাদের কষ্ট হয়। মশা-মাছির উৎপাত বেশি। ময়লা-আবর্জনা নিয়ে তাদের শরীরে মশা-মাছি বসে। দুর্গন্ধের জন্য মাঝেমধ্যে শ্রেণীকক্ষের দরজা জানালা বন্ধ করে তাদের পাঠদান করানো হয়। এমইউ কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাশারুল ইসলাম জানান, আমি ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুবেল মিয়াকে ময়লা ফেলার বিষয়টি জানিয়েছিলাম তারপর থেকে ময়লা ফেলা কিছুটা কমলেও এখন আবারও সেই আগের মতো ময়লা ফেলা হচ্ছে। ময়লার দূর্গন্ধে আমার শিক্ষার্থীদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। তিনি আরও জানান জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে কোন অনুষ্টান হলে নোংরা পানি ও ময়লা ফেলে স্কুলের যাবার রাস্তার পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র্রে কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, দীর্ঘদিন পচা দূর্গন্ধ নাকে গেলে শিশুদের শ^াসনালীতে বিভিন্ন ইনফেকশন দেখাদিতে পারে। কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ জানান, আমি কয়েকবার ওখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করেছি। কলাহাটার পরিছন্নকর্মীরা ওখানে ময়লা ফেলে। অমি জায়গাটি পরিদর্শন করবো যদি সম্ভব হয় জায়গাটা তারকাটার বেড়া দিয়ে ঘিরে দিবো। ময়লা আবর্জনার দূর্গন্ধে কোমলমতি শিশুদের অনেক কষ্ট হয়। অমি খুব তাড়াতাড়ি সুন্দর একটা স্থায়ী সমাধান করবো।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান জানান, বিষয়টি আমার জানাছিলোনা । আমি মেয়র মহদয়ের সাথে কথা বলে ময়লা ফেলানো বন্দ করবো।




No comments

Powered by Blogger.