টানা বর্ষনে কালীগঞ্জে ৫’শ হেক্টর ফসল পানিতে নিমজ্জিত ভেসে গেছে পুকুরের মাছ \ ৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশংকা

 

রবিউল ইসলাম,স্টাফ রিপোর্টার-ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমন, সবজি,ফল ও মৎস চাষিরা। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় প্রায় ৫’শ হেক্টর জমির ফসল এখনো পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তবে কৃষি অফিস ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখনো নিরুপন করতে না পারলেও তা কয়েক কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। অপরদিকে উপজেলার প্রায় শতাধিক মৎস পুকুর ডুবে ভেসে গেছে মাছ। এ খাতেও ক্ষতির পরিমানও কোটি টাকার কাছাকাছি। এদিকে বৃষ্টি থামার পর বিভিন্ন এলাকার নিমজ্জিত অঞ্চলে পানি নামতে শুরু করলেও এখনো অনেক স্থানেই নিমজ্জিত ফসলের চিত্র দৃশ্যমান দেখা গেছে। এবারের বৃষ্টিতে আগাম শীতকালীন সবজি ও আমনের ক্ষতিটাই বেশি হয়েছে। সেই সাথেই শহরের অনেক স্থানেই এখনো অতিবৃষ্টির পানি জমে থই থই করছে। চরম ভোগান্তীতে ব্যবসায়ীরা। বিগত ৮৮ সালের বন্যার পর এবারই টানা বর্ষণে ক্ষতির পরিমানটা বেশি বলে অনুমান করছে ভূক্তভোগীরা। সবমিলিয়ে টানা বর্ষনে এ উপজেলাতে আমন, সবজি, ফল, মৎস ও কাঁচা ঘরবাড়ি বিনষ্ট হয়ে ৫ কোটি টাকার উপরে ছাড়িয়ে যেতে পারে ক্ষয়ক্ষতি। 

ক্ষতিগ্রস্থ ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে পৌরসভার নিশ্চিন্তপুর এলাকার সবজি চাষী সাইদুল ইসলাম জানায়, চিত্রা নদী সংলগ্ন বরগা নেওয়া ৪ বিঘা জমিতে সবজি লাউ ও দেড় বিঘা কলা চাষ করেছিল। এবারে টানা বর্ষনে তার সব ফসল পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। ড্রাগন চাষী সুমন জানায়, পানিতে তার দুই বিঘার ড্রাগন ফল ক্ষেতের অনেকটাই ক্ষতি হয়ে গেছে। তাদের মত রায়গ্রাম ইউনিয়নের আক্কাচ আলী সহ এলাকার অনেক কৃষকের আমন ক্ষেত এখনো পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। হা-হুতাশ করছেন কৃষকেরা। 

এবার টানা বর্ষনের কবলে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি জানান, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের মধ্যে রায়গ্রাম, সিমলা রোকনপুর ও বারবাজার ইউনিয়নেই ক্ষতির পরিমানটা যেন বেশি। কৃষি অফিসের প্রাথমিক জরিপে ক্ষতিগ্রস্থ ফসল গুলির মধ্যে আমন ধান- ২শ ৫৫ হেক্টর, সবজি- ১শ ৪০ হেক্টর, মাসকলাই- ৩৩ হেক্টর, কাঁচা মরিচ  ২৯ হেক্টর, পেঁয়াজ- ২৬ হেক্টর ও অন্যান্য ফসল সহ  প্রায় ৫”শ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত। আর্থিক ক্ষতির পরিমান নিরুপনের কাজ চলছে। দু,এক দিনের মধ্যে সঠিক তথ্য পাবেন। আপাতত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসান সাজ্জাত জানান, পৌরসভা ও বারবাজার ইউনিয়নে মৎস চাষের পুকুর সংখ্যা বেশি। এবার বর্ষনে প্রায় শতাধিক পুকুর ডুবে মাছ ভেসে গেছে। এ খাতে ক্ষয়ক্ষতি প্রায় কোটি টাকা হতে পারে বলে জানান তিনি। 

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসনে আরা তান্নি জানান, টানা বর্ষনে উপজেলা কৃষি ও মৎস অফিসের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপনের কাজ চলছে। তবে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার বিষয়ে এখনো কোন সরকারী নির্দ্দেশনা আসেনি বলে জানান তিনি।




No comments

Powered by Blogger.