পদায়ন শৈলকুপার উমেদপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে , কিন্তু যান না কোন দিন

 ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-

প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার কথা চিন্তা করে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পদায়ন দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। গ্রামের মানুষ যেন ভোগান্তি ছাড়ায় স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করতে পারে এজন্য সরকারের এই উদ্যোগ। কিন্তু ঝিনাইদহের এক চিকিৎসক পদায়নকৃত কর্মস্থলে যান না কোনদিন। এতে ব্যাহত হচ্ছে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্যে। সরকারের নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানো চিকিৎসক মাহাবুবুল আলম পারভেজ বসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

জানা যায়, ডা: মাহবুবুল আলমকে শৈলকুপার উমেদপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পদায়ন হয় কয়েকমাস আগে। কিন্তু সেখানে তিনি কোনদিন যান নি। গ্রামের মানুষের সেবা দেওয়া তো দুরের কথা পরিদর্শনেও যান না তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর ডা: মাহবুবুল আলম পারভেজকে উমেদপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পদায়ন করে স্বাস্থ্য বিভাগ। সেখানে পদায়ন করার পর থেকে তিনি শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসেন। অফিস সময়ে হাসপাতালে না গিয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে মোটা টাকার বিনিময়ে অপারেশন করান। ডা: মাহবুবুল আলম’র এ কর্মকান্ডে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ।

উমেদপুর গ্রামের ভ্যানচালক রাকিব হোসেন বলেন, শুনেছি এই হাসপাতালে বড় ডাক্তার আছে। কিন্তু কোনদিন তো তাকে চোঁখে দেখলাম না। আমরা হাসপাতালে গেলে তাকে পাই না। হাসপাতাল থেকে কিছু ঔষধ দেয় তা নিয়ে চলে আসি।

একই গ্রামের রইচ উদ্দিন বলেন, সরকার আমাদের সেবা দেওয়ার জন্য তাকে এই হাসপাতালে বদলি করেছে। কিন্তু উনি কোনদিন আসে না। আমাদের সেবা দেওয়ার জন্য সরকার তাকে টাকা দেয় কিন্তু আমাদের সে সেবা দেন না।

রাহাজ মোল্লা নামের এক দিনমজুর বলেন, আমরা শৈলকুপা বা ঝিনাইদহ গিয়ে ডাক্তার দেখায়। আমাদের এখানে যখন একজন ভালো ডাক্তার আছে তাহলে আমরা দুরে যাব কেন। সেই ডাক্তার তো কোনদিন আসে না। তাহলে এখানকার নাম দিয়ে তিনি বেতন তোলেন কেন। শুনেছি উনি শৈলকুপায় প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখেন। সরকার আমাদের দেখার জন্য টাকা দেয় আর উনি দুর্নিতী করে শৈলকুপায় প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখেন। এই দুর্নিতীবাজ ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক মাহবুবুল আলম পারভেজ বলেন, আমাদের পদায়ন হওয়ার পর থেকেই আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী দেখি। আমাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই আমরা সেখানে বসি।

শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রাশেদ আল মামুন বলেন, মাহবুবুল আলম তার ইচ্ছেমত কাজ করেন। তাকে কোন নির্দেশ দিলে তিনি কথা শোনেন না। তার আচরণও ভালো না। তাকে আমরা মৌখিক বা লিখিত কোনভাবেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বলিনি।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা: শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পদায়ন হলেও উনারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী দেখেন।


No comments

Powered by Blogger.